বেনাপোল প্র‌তি‌নিধি

২৩ নভেম্বর, ২০১৬ ২২:০৫

বেনাপোলে শিক্ষককে দণ্ড দেওয়ায় প্রতিবাদ, পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা

বেনাপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিইসিই পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বজলুর রহমান নামের এক স্কুল শিক্ষককে শিক্ষার্থীদের সামনে হ্যান্ডক্যাপ পরিয়ে আটক ও জেল হাজতে পাঠানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শার্শা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।

বুধবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে সারাদেশের ন্যায় বেনাপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিইসিই পরীক্ষা শুরু হলে হল সুপার বজলুর রহমান তার নিজ দায়িত্ব পালন করছিলেন। কক্ষ পরিদর্শনের সময়ে তার গায়ে লেগে এক পরীক্ষার্থীর প্রশ্নপত্রটি বেঞ্চের নিচে পড়ে যায়।

এ সময় উক্ত শিক্ষক নিচু হয়ে প্রশ্নপত্রটি তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ঘটনাক্রমে প্রশ্নপত্রটি তার হাতে থাকাকালীন সময়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ইউএনও) উক্ত কক্ষে প্রবেশ করেন এবং ঐ শিক্ষকের হাতে প্রশ্নটি দেখে ফেলেন। এ সময় তিনি তার হাতে প্রশ্নপত্র থাকার কারণে কক্ষভর্তি ছাত্রছাত্রীদের সামনে পুলিশ ডেকে হ্যান্ডক্যাপ পরান। এ সাথে জনসম্মুখে তাকে টেনে হেঁচড়ে পুলিশের পিকআপ ভ্যানে উঠিয়ে উপজেলা পরিষদে নিয়ে আসে। পরে ৭দিনের কারাদণ্ড দিয়ে থানা হাজতে প্রেরণ করেন।

ঘটনাটি এভাবে বললেন উক্ত পরীক্ষা কক্ষের দায়িত্ব প্রাপ্ত কক্ষ পরিদর্শক নাসিমা খাতুনসহ শার্শা প্রেস ক্লাবের এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ সহ সাধারণ শিক্ষক।

উল্লেখ্য, বজলুর রহমান উক্ত স্কুলে হল সুপারের দায়িত্ব পালন করছিলেন এবং তিনি রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

এ বিষয়ে আটক বজলুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, বিষয়টি না বুঝেই ইউএনও স্যার আমার নামে মামলা দিচ্ছে। আসলে আমাকে যে অপরাধে মামলা দেওয়া হচ্ছে আমি সে অপরাধে অভিযুক্ত না। পরীক্ষা কেন্দ্রে একটি ছাত্রের প্রশ্নপত্র নিচে পড়ে গেলে আমি মানবিক কারণে তার প্রশ্নপত্রটি তুলে দেই।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, বেনাপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিইসিই পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে হল সুপার বজলুর রহমান পরীক্ষার্থীদের নকল সরবরাহ করছিল। এ সময় তাকে আটক করে পরীক্ষা সুষ্ঠু সুন্দর করার আদেশ জারি ভঙ্গের অপরাধে ৭দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ জানান, এ ঘটনার প্রতিবাদে তারা বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার সময় শার্শা উপজেলা চত্বরে কালো ব্যাজ ধারণ সহ মানববন্ধন, বৃহস্পতিবারের মধ্যে শিক্ষক বজলুর রহমানকে নিঃশর্ত মুক্তি ও ইউএনও আব্দুস সালামকে অপসারণ না করা হলে রবিবার থেকে পিইসিই পরীক্ষা বর্জন সহ খাতা মূল্যায়ন ও ফলাফল প্রস্তুতি থেকে বিরতি থাকা হবে।

এ সময় শার্শা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ইজ্জত আলী, সিনিয়র সহ-সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ওসমান গনি মুকুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক নওসের আলী, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য এমদাদুল হোসেন, প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম, শেখ শফিউদ্দিন, আব্দুর রাশেদ আলী, আশরাফ হোসেন, মনিরুজ্জামান, আমির আলি, মোনয়ার হোসেন, আতায়ুর রহমান, রেজাউল ইসলাম, মহসিন আলী, ইকবাল হোসেন, রিপন হোসেন, শামসুল আলম, আহসান হাবিব, আব্দুল মজিদ, শফিকুল ইসলাম, ইকরাম হোসেন, তাজউদ্দিন, আলমগীর আলম, আব্দুল মমিন, নাসরিন সুলতানা, জেবুন্নেছা আলো, জান্নাতুন ফেরদৌস, ওজিহার রহমান, মাসুদ মহসিন, বিল্লাল হোসেন, আক্তার ফারুক, গোলাম মোরসেদ, জাহাঙ্গীর আলম, শাহিনুর রহমান, সবুক্তগীন, মকবুল হোসেন, শাহানাজ পারভিন, মফিজুল ইসলাম, হাসান ফিরোজ, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত