সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ জুলাই, ২০১৭ ০১:৫১

ধামরাইয়ে উল্টো রথযাত্রা করার সিদ্ধান্ত

নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে পুলিশ মেলার ব্যবসায়ীদের তুলে দিলে প্রতিক্রিয়ায় ঢাকার ধামরাইয়ে ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী যশোমাধবের উল্টো রথযাত্রা বন্ধ রাখার ঘোষণার পর প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন আয়োজকরা।

রোববার রাতে ধামরাই থানায় মেলা আয়োজক কমিটির সদস্যদের সঙ্গে পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের বৈঠকের পর সোমবার আগের ঘোষণা অনুযায়ী যথারীতি উল্টো রথ টানা এবং মেলা চলার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন ধামরাই থানার ওসি মোহাম্মাদ রিজাউল হক।

ধামরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দীপক কুমার সাহা বলেন, রাত ৮টার দিকে বৈঠক শুরু হয়ে তা রাত ১২টায় শেষ হয়। পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহবুবুর রহমান, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান, স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মালেক, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং মন্দির ও রথ উদযাপন কমিটির সদস্যরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

এরপর ধামরাই থানার ওসি মোহাম্মাদ রিজাউল হক বলেন, “বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল উল্টো রথ টানা হবে এবং মেলাও চলবে।”

এর আগে রোববার সন্ধ্যায় রথ পরিচালনা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন পুলিশের আচরণের প্রতিক্রিয়ায় রথযাত্রা বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন।

সোমবার উল্টো রথযাত্রা শুরুর কথা ছিল। ধামরাইয়ের বিখ্যাত এই রথযাত্রা দেখতে নানা প্রান্তের মানুষ ছুটে যান। সেখানে মেলাও বসে প্রতিবছর। এবার রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে ধামরাই বাজারে বসা মেলার দোকানিদের রোববার সকালে তুলে দেয় পুলিশ। বন্ধ করে দেওয়া হয় সার্কাস, চড়ক গাছ, লটারি ও পুতুল নাচ। সেখানে পুলিশের সঙ্গে টহলে দেখা যায় র‌্যাবকেও।

নন্দ গোপাল বলেন, “আমাদের এই রথটা চারশ বছরের ঐতিহ্য। এবার পুলিশ আমাদের মেলা বন্ধ করে দিয়েছে। যদি মেলাই না হয়, আনন্দই না হয়, তাহলে রথ আমরা টানব না। এটা আমাদের কমিটির সিদ্ধান্ত।”

মেলা বন্ধের কারণ হিসেবে পুলিশ নিরাপত্তার কথা বলে বলে দোকানিরা জানায়। রথে জঙ্গি হামলা হতে পারে বলেও গুঞ্জন ছড়ায়।

পুলিশের কাছ থেকে এমন তথ্য পাওয়ার কথা ধামরাই পৌরসভার মেয়র গোলাম কবীর মোল্লাও জানান। মেয়র কবীর বলেন, “জঙ্গি হামলার আশঙ্কার কথা জানিয়ে পুলিশ আমাদের সঙ্গে মিটিংও করেছে।”

তবে দুপুরে যোগাযোগ করা হলে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম বলেন, “জঙ্গি হামলার আশঙ্কার কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।”

পরমাত্মায় জীবাত্মার মিলনকে ‘চিরমুক্তি’ বলে বিশ্বাস করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা, সেই পারলৌকিক মুক্তি কামনায় ভগবানের কৃপা প্রার্থণা করে রথযাত্রার অনুষ্ঠান পালন করে তারা।

আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হল এ উৎসব, আর একাদশী তিথিতে হয় প্রত্যাবর্তন; অর্থাৎ রথটি প্রথম দিন যেখান থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়, আটদিন পরে আবার সেখানেই ফিরিয়ে আনা হয়। একে বলে ‘উল্টো রথ’।

শ্রীকৃষ্ণের বৃন্দাবন ফেরার তিথিকে হিন্দুরা রথযাত্রা উৎসব হিসেবে উদযাপন করে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত