সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ এপ্রিল, ২০১৮ ২১:৫১

আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

ঢাকা ও রাজশাহীতে টানা চারদিন অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ১৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ডেবিট কার্ড, চেক বই ও কয়েকটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বিপ্লব লস্কর (৩০), মো. কায়েস হোসেন (৩০), রবিউল ইসলাম প্রকাশ সজিব (২৫) ও মোশারুল ইসলাম প্রকাশ মুছা (২৮)। আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের এই চার প্রতিনিধি বাংলাদেশে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।

শনিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের এসব তথ্য জানায় চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

এসময় নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (বন্দর) মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ জানান, একটি আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন লোকের কাছে মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠিয়ে প্রথমে সুসম্পর্ক গড়েন। পরে সুসম্পর্কের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে টাকা পয়সাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র আত্মসাৎ করে আসছিলো। নাইজেরিয়া ও কেনিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশের প্রতারক চক্রের তাদের যোগাযোগ আছে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রাজশাহী ও ঢাকা থেকে প্রতারক চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির ১৭টি ব্যাংক একাউন্টের ডেবিট কার্ড, চেক বই ও কয়েকটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয় বলেও জানান তিনি।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (বন্দর) আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, কেনিয়া ও নাইজেরিয়ায় থাকা প্রতারক চক্র নিজেদের আয়ারল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে ফেসবুকে আইডি খোলে। বাংলাদেশি ধনী পরিবারের নারীদের টার্গেট করে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে তারা। নিয়মিত যোগাযোগের এক পর্যায়ে তাদের জন্য বিভিন্ন দামি ও লোভনীয় উপহার পাঠানোর কথা জানিয়ে দেয়। এর কিছুদিন পর বাংলাদেশে থাকা চক্রটির সদস্যরা নিজেদের কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে টার্গেট করা নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তার জন্য উপহার এসেছে জানিয়ে পণ্যটি ছাড়িয়ে নিতে নির্দিষ্ট অংকের শুল্ক পরিশোধ করতে হবে বলে জানিয়ে দেন। তাদের সরবরাহ করা ব্যাংক হিসাবে শুল্কের টাকা জমা দিতে বলা হয়। টাকা জমা হলেই যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় প্রতারক চক্র।

তিনি আরো বলেন, এভাবে চট্টগ্রামে প্রতারণার শিকার এক নারীর কাছ থেকে আট লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। বিদেশী এক প্রতারকের প্রতিনিধি হিসেবে টাকাগুলো হাতিয়ে নেয় গ্রেপ্তারকৃত চারজন। এরপর তারা বাংলাদেশ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া টাকায় গার্মেন্টস পণ্য কিনে নাইজেরিয়ায় পাঠিয়ে দেয়। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া কোটি কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে বিদেশে।

'নিম্ন আয়ের লোকজনকে দিয়ে অনেকগুলো ব্যাংক হিসাব খোলে প্রতারকরা। চেকবই ও কার্ডগুলো থাকে তাদের হাতে। কেউ প্রতারক চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে টাকা পাঠালেই টাকাগুলো তারা তুলে নেয়। যার নামে ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে তিনি জানতেও পারেন না বিষয়টি। গ্রেফতার চক্রের ৫২টি ব্যাংক হিসাবের সন্ধান পাওয়া গেছে’ বলে জানিয়েছেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার আসিফ মহিউদ্দিন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত