সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ মে, ২০১৮ ১৩:৫৯

মাদকবিরোধী অভিযান: গত রাতে নিহত ১১

চলমান মাদক বিরোধী অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধ ও গোলাগুলির ঘটনায় ৮ জেলায় ১১ জন ‘মাদক ব্যবসায়ী’ নিহত হয়েছেন।

রবিবার (২৭ মে) রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত এসব বন্দুকযুদ্ধ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

এসব অভিযানে সাতক্ষীরায় দুজন, কুমিল্লায় দুজন, পিরোজপুরে দুজন, ঢাকায় একজন, মুন্সীগঞ্জে একজন, চাঁদপুরে একজন, ঝিনাইদহে একজন এবং পাবনায় একজন নিহত হয়েছেন।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, নিহতরা সবাই মাদক চোরাকারবারে জড়িত ছিল। কারও কারও বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে।

এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, তারা মাদকের বিরুদ্ধে ‘অলআউট’ যুদ্ধে নেমেছেন, নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।

বিভিন্ন জেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায়-

কুমিল্লা

দেবিদ্বারের পশ্চিম ভিংলাবাড়ি এবং সদর দক্ষিণ উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী গলিয়ারা এলাকায় পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন এনামুল হক দোলন ভূইয়া (৩৫) ও নুরু (৫৫) নামের দুজন।

পুলিশ বলছে, দোলন ভূইয়া পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি এবং নুরুও মাদক কেনা-বেচায় জড়িত।

এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে শুধু কুমিল্লায় নিয়ত হয়েছে ১০ জন।

পিরোজপুর

সদর উপজেলায় অহিদুজ্জামান অহিদ এবং মঠবাড়িয়া উপজেলায় মো. মিজান নামে দুজন নিহত হন কথিত বন্দুকযুদ্ধে।

পুলিশ জানায়, আলাদা আলাদা অভিযানে এসময় ১ টি পাইপগান, ২টি দা, ৫ রাউন্ড বন্দুকের কার্তুজ ও ২৩৫টি ইয়াবা ট্যাবলেট, দেড় কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

সাতক্ষীরা

ভোমরা সড়কের বাঁকালের আগুনপুর গ্রামে রাস্তার পাশে অজ্ঞাত পরিচয়ের দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, তারা মাদকের ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন।

সদর থানার এসআই প্রবীর কুমার দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ঢাকা

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হন।

নিহতের নাম পুলিশ নিশ্চিত করতে না পারলেও স্থানীয়রা বলছেন, তিনি রূপনগরের চলন্তিকা বস্তির ‘শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী’ নজরুল ইসলাম নজু।

ঘটনাস্থল থেকে দুই রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল ও পাঁচ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

মুন্সীগঞ্জ

সদর উপজেলার মুরমা গ্রামে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সুমন বিশ্বাস (৩৬) নামে একজন নিহত হন। তিনি ওই এলাকার বাবুল বিশ্বাসের ছেলে।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাউদ্দিন জানান, “মিরকাদিম পৌরসভার মুড়মা এলাকায় দুই দল মাদক বিক্রেতার বন্দুকযুদ্ধ হয়। এই সময় প্রতিপক্ষের গুলিতে সুমন নিহত হয়।”

সুমন মাদকসহ ২০ থেকে ২৫টি মামলার আসামি বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে একটি ছুরি ও বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারের কথাও জানান পুলিশ কর্মকর্তা সালাউদ্দিন।

ঝিনাইদহ

সদর উপজেলার জারগ্রামে ফরিদ হোসেন ( ৪২ ) নাম একজন মাদকের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের গোলাগুলিতে নিহত হন বলে পুলিশের দাবি।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, ২টি গুলি, ১টি ম্যাগজিন, কেজি খানেক গাঁজা, ২০ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।

চাঁদপুর

ফরিদগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে আবু সাঈদ বাদশা ওরফে লাল বাদশা (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন।

বাদশা ফরিদগঞ্জের গোবিন্দপুর গ্রামের আবদুর রশিদ ছৈয়ালের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১০টি মাদক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

অভিযানস্থলে ১১১টি ইয়াবা ট্যাবলেট, ১টি একনলা বন্দুক, ৪ রাউন্ড গুলি ও ১টি হাতবোমা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পাবনা

বেড়া উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইজ্জত আলী প্রামানিক (২৮) নামে একজন মারা গেছেন।

তিনি উপজেলার হাটুরিয়া পূর্বপাড়ার মৃত আজাহার আলী প্রামাণিকের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও অপহরণের অভিযোগে ১৪টি মামলা রয়েছে।

মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত এই বন্দুকযুদ্ধে গত নয় দিনে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু হল দেশের বিভিন্ন জেলায়।

তবে বিভিন্ন সময়ে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ এসেছে, ধরে নিয়ে হত্যা করা হয় তাদের স্বজনদের।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো এসব বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারের ঘটনাকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করে তা বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত