সিলেটটুডে ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৯:১০

মহাজোট ২৪৮, ঐক্যফ্রন্ট ৪৯ আসন: আরডিসি

জরিপের তথ্য

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৪৮ আসন পেতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট। তাদের বিরোধী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পাবে ৪৯ আসন, ৩ আসন পেতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরাসহ অন্যান্যরা। আর্ন্তজাতিক সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আরডিসি) এর সর্বশেষ জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন মার্কিন পরামর্শক ফরেস্ট ই কুকসন। ডেভেলপমেন্ট ইন ডেমোক্রেসি নামে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থার অর্থনীতিবিদ।

আরডিসি বলছে, এবারের নির্বাচন সামনে রেখে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে গ্রাম ও শহরের ২ হাজার ২৪৯ জন ভোটারের ওপর মতামত জরিপ চালিয়েছে তারা।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৬০ শতাংশ উত্তরদাতা মহাজোট, ২২ শতাংশ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ৪ শতাংশ জাতীয় পার্টিকে সমর্থন জানিয়েছেন।

আর ১০ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা এখনও নিশ্চিত নন। ৩ শতাংশ ভোটার উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। আর এক শতাংশের কম ভোটার বলেছেন, তাদের ভোট দেওয়ারই আগ্রহ নেই।

জরিপ সম্পর্কে ফরেস্ট ই কুকসন বলেন, গ্রামীণ নারী থেকে সেনাবাহিনীর সদস্য—সব শ্রেণি, পেশা ও বয়সের মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। নমুনার সংখ্যা একটু ছোট। কত জেলা বা উপজেলায় এই জরিপ করা হয়েছে, তা আমি এখন বলতে পারছি না। তবে দেশের প্রত্যেক অঞ্চলের ভোটারদের থেকে মতামত নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ হয়ে নির্বাচনের সম্ভাব্য ফলাফল জানতে এই জরিপ করা হয়। গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে নির্বাচনের আগে এই ধরনের ভোট নেওয়ার রেওয়াজ আছে।

ছায়া জরিপে ভোট দিতে নারীদের জন্য ছিল লাল ব্যালট পেপার এবং পুরুষদের জন্য ছিল নীল ব্যালট পেপার। ২০১১ সালের আদমশুমারির তথ্যগুলোকে নমুনা হিসেবে নিয়ে দৈবচয়নের ভিত্তিতে দেশের জেলা-উপজেলাগুলো থেকে ভোটারদের এই জরিপ করা হয়। প্রশ্ন ছিল, ‘আজ যদি নির্বাচন হয়, তবে কার জন্য ভোট দেবেন?’

ভোট দেওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলো সম্পর্কে মতামত দিয়েছে ভোটাররা। ফলাফলে আওয়ামী লীগকে ভালো বলেছে, ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ এবং খারাপ বলেছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ। বিএনপিকে ভালো বলেছে ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ এবং খারাপ বলেছে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ। জাতীয় পার্টিকে ভালো বলেছে ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ এবং খারাপ বলেছে ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ।

জাতীয় নির্বাচনের ভোটারদের সংখ্যার তুলনায় এই জরিপের নমুনার সংখ্যা কম বলে মনে করেন কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ফরেস্ট ই কুকসন বলেন, জরিপটির নমুনা ছোট। তবে যুক্তরাষ্ট্রেও এমন ধরনের জরিপ নেওয়া হয় যেখানে নমুনার সংখ্যা থাকে কেবল এক হাজার। ছোট নমুনা হলে সহজে সেটা ব্যবস্থা করে একটা উত্তর পাওয়া যায়।

ভোটারদের মতামত সম্পর্কে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘আমার মনে হয়, নির্বাচনে সহিংসতা বা দ্বন্দ্ব যা-ই হোক না কেন, সেটা হয়তো ভোটারদের ওপর প্রভাব ফেলবে। কিন্তু ভোটারদের পছন্দ একই থাকবে।’

২০১৪ বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন একক প্রার্থীরা। এ নির্বাচনে সব মিলিয়ে ২৩২টি আসনে জয় পেয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মত সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি ৩৩টি, ওয়াকার্স পার্টি ছয়টি, জাসদ পাঁচটি, জেপি একটি, তরিকত ফেডারেশন একটি, বিএনএফ একটি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৩টি আসনে জয় পান।

এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠাতা পেয়েছিল৷ দুই বছর জরুরি অবস্থার পর ২০০৮ সালের ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩০, বিএনপি ২৯, জাতীয় পার্টি ২৭, জাসদ তিনটি, ওয়ার্কার্স পার্টি দুটি, জামায়াতে ইসলামী দুটি, এলডিপি একটি, বিজেপি একটি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চারটি আসনে জয়ী হন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত