আব্দুল করিম কিম

০৯ জুলাই, ২০২০ ০০:৫৯

বাংলাদেশ এখন সাহেদ ভাইদের

সাহেদ ভাই, পাপলু ভাই, পাপিয়া আপা, সম্রাট ভাই ধরা পরে যাওয়ায় আপনারা ভাবছেন দূর্নীতি করে কেউতো ছাড় পাচ্ছে না। তাহলে বাংলাদেশ সাহেদ ভাইদের কিভাবে হলো?

আসলেই ছাড় পাচ্ছে না- এই কথা কি মনেপ্রানে বিশ্বাস করেন? যদি এমনটা আপনার বিশ্বাস হয় তবে বোকার স্বর্গে আছেন জনাব।

সম্রাট আটক হওয়ার পর তার কাহিনী যখন প্রকাশ পেতে থাকলো তখন কি আপনারা জানতেন পাপিয়া আপা বলে একজন দাপটের সাথে ঢাকাতে আছেন?

জানতেন না।

পাপিয়া আপা ধরা খাওয়ার পর তাকে নিয়ে যখন হৈহৈ কান্ড রৈরৈ ব্যাপার চলছে তখন আপনারা কি জানতেন সাংসদ পাপলু বলে একজন আইন প্রনেতা আছেন দেশে। যার মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা বিদেশ পাচার হয়েছে?

যে হাজার হাজার মানুষের সর্বস্ব লুটে নিয়ে বিত্তশালী হয়ে মাত্র পঞ্চাশ কোটি টাকা ব্যায় করে জাতীয় সংসদের দুইটি আসনের মালিক হয়ে গেছে? জানতেন না।

পাপলু কান্ডের রেশ থাকতে না থাকতে জানা গেলো মানুষের জীবন নিয়ে যখন বিশ্ব উৎকন্ঠায়। বিভিন্ন দেশ কোভিড-১৯ মহামারি থেকে নিজেদের নাগরিকদের রক্ষায় নানা উদ্যোগ নিচ্ছে তখন বাংলাদেশে জেকেজি নামের প্রতিষ্ঠান খোদ রাজধানীতে মানুষকে প্রতারিত করেছে করোনা টেস্টের নামে।

তখন কি সাহেদ ভাইয়ের কথা জানতেন? জানতেন না।

সাহেদ ভাই তখন দেশের মাথাদের সাথে সেলফি তুলছেন আর নিজের লাইসেন্স বিহীন হাসপাতালের জন্য করোনা টেস্টের অনুমোদন লাভ করছেন।

এখন সাহেদ ভাই কট। কাহিনীর পর কাহিনী এখন সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসতে থাকবে। এরপর হয়তো আবার নতুন কোন ভাই বা আপা সামনে আসবেন।

এখন ভাইয়েরা আমার একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে বলেনতো- সম্রাট, পাপিয়া, পাপলু, জেকেজি, সাহেদ এরা কি আমাদের আইনের যথাযথ প্রয়োগের জন্য ধরা খেয়েছে? না, অতি লোভে তাতী নষ্ট করার কারনে ধরা খেলো?

সাহেদের মত বড় মাপের টাউটের প্রতিষ্ঠানে র‍্যাবের একজন ম্যাজিস্ট্রেট হুট করে অভিযান দিয়ে সব কিছু তছনছ করে ফেলবেন, এইটা বিশ্বাস হয়?

আমি বিশ্বাস করি না।

বাটপারী করতে করতে আর প্রভাবশালীদের সাথে গলাগলি ছবি তুলতে তুলতে এতো বেপরোয়া হয়ে যায় যে, তার প্রতিষ্ঠান করোনা টেস্টের নামে এমন কোন প্রভাবশালীর টেস্ট নিয়ে জালিয়াতি করেছে যা মেনে নেয়াটা কঠিন হয়ে পরে। নিজেদের জীবন হুমকিতে যাওয়ায় একশনে যেতে হয়।

আমার ধারণা-এর কান্ডকীর্তি সম্পর্কে সব তথ্য গোপনে সংগ্রহ করা হয়েছে এবং নিশ্চিত হয়ে উর্ধ্বতনের দরবারে পেশ করা হয়েছে।

উর্ধ্বতন বলতে দেশে একটা জায়গাই উর্ধ্ব। সেখান থেকেই অনুমোদন এসেছে।

পাপিয়া ও সম্রাটের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা। শুধু জেকেজির জন্য এতো উর্ধ্বে যাওয়া লাগেনি।

ঢাকায় আরো অসংখ্য সাহেদ আছে, সম্রাট আছে, পাপিয়া আছে। জেলায় জেলায় আছে। থানায় থানায় আছে। অতি লোভে তাঁতি নষ্ট না করা পর্যন্ত এদের তেমন কোন সমস্যা হবে না। বড় বড় মানুষের সাথে সেলফী তোলা থাকলেই চলবে।

এতেই সবাই সমঝে চলবে।

তাই ভাইয়েরা আমার দুই-একটা সাহেদ-সম্রাটের আটকে খুশি হয়ে বগল বাজানোর কিছু নেই। সাংসদ পাপলুকে কুয়েতের পুলিশ আটক না করলে জীবনেও তাকে কেউ ধরতো না। তার অপকর্মের সঙ্গী, সেই মহিলা সাংসদের কিছু কি হয়েছে? বর্তমান সংসদে পাপলু মার্কা লুটেরা সাংসদ কি আর নেই? দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারবেন কেউ?

(ফেসবুক থেকে সংগৃহিত)

লেখক: সংগঠক, পরিবেশকর্মী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত