শাহআলম সজীব

২৪ জুলাই, ২০২০ ১১:৪২

ক্ষণে ক্ষণে বদলাচ্ছেন আ স ম রব

প্রায়ই শুনতাম "মানুষ মরে গেলে পচে যায় আর বেঁচে থাকলে বদলায়।" জনাব আ.স.ম আব্দুর রবের ক্ষেত্রে ঘটেছে দুটোই, "তিনি না মরেও পচেছেন যেমন তেমনি বদলাচ্ছেন ক্ষণে ক্ষণে।"

শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করতে গিয়ে জনাব রব ইতিহাস বিকৃতির মতো জঘন্য কাজ করে চলছেন! হিংসুটে মনের জ্বালা মিটাতে গিয়ে আওয়ামী লীগের বিরোধিতায় অবতীর্ণ হলে মেনে নেয়া যেতো কিন্তু আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করতে গিয়ে করছেন ইতিহাসের বিকৃতি ! কতটা জঘন্য হলে এমন কাজ করা যেতে পারে?

জনাব রবের এই ইতিহাস বিকৃতি কি শুধু আওয়ামী লীগের বিরোধিতা থেকে, হিংসা থেকে নাকি ভেতরে অন্যকিছু রয়েছে? প্রায় দেখেছি জনাব রব লন্ডনে পলাতক তারেক রহমানের হয়ে কাজ করতে। বারবার তিনি দেশকে অস্থিতিশীল করতে কাজ করেছেন এর আগে। এর আগেও অনেকবার ইতিহাস বিকৃতি করেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে জঘন্য চরিত্র মেজর জিয়াকে স্বাধীনতার নায়ক বা বঙ্গবন্ধুর সমান্তরাল করতে একের পর এক ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে।

আ.স.ম আব্দুর রব জঘন্য যে মিথ্যাচার সামনে নিয়ে এসেছেন তা অত্যন্ত ভয়াবহ। ১৯৭১ সালে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র বা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ট্রান্সমিটারের ক্ষমতা ছিল ১০ কিলোওয়াট যা অনএয়ারে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ কি.মি. পর্যন্ত শোনা যেত। অন্যদিকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জের দূরত্ব ২৫০ কি.মি.। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ইতিহাস বিকৃতকারী আ.স.ম আব্দুর রব কী করে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান শুনলেন কেরানীগঞ্জ থেকে?

জনাব আ.স.ম আব্দুর রব মেজর জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বানাতে অনেক অনেক সত্যকে আড়ালে করে দিয়েছেন! ২৫ মার্চের শেষ আর ২৬ মার্চের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। যার ঘোষণায় রবসহ অন্যান্যরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন।

অন্যদিকে ২৬ মার্চ সকালে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব এম.এ হান্নান সর্বপ্রথম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণার প্রথম পাঠ করেন। ২৭ মার্চ আওয়ামী লীগের আরেক নেতা আবুল কাশেম সন্দীপ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে দ্বিতীয়বার স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে। ওইদিন বেতার কেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বেলাল মোহাম্মদও স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। তারপর চট্টগ্রামে অবস্থানরত মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন (জিয়ার আগে মোট ১১ জন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন)।

আ.স.ম আব্দুর রব ইতিহাস বিকৃতির এই ক্ষণে সাক্ষী হিসেবে যাদের নাম বলেছেন তাদের মধ্যে শেখ ফজলুল হক মনি এবং আবদুর রাজ্জাক আনাদের মাঝে না থাকলেও এখনো বেঁচে আছেন রাজনীতির কথিত রহস্য পুরুষ সিরাজুল আলম খান এবং তোফায়েল আহমেদ। আমরা জনাব তোফায়েল আহমেদের বক্তব্য চাই আ.স.ম আব্দুর রবের এই বক্তব্যের ব্যাপারে। যদি রবের বক্তব্য সত্য হয়ে থাকে তাহলে সত্যটা মেনে নিতেই হবে আর মিথ্যে হলে আব্দুর রবের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির দায়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে বারবার ইতিহাস বিকৃতি করা হবে যার যার প্রয়োজনে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত