ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ

৩১ মার্চ, ২০২১ ২৩:০০

বাবুনগরী-মামুনুলরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছে

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে ঘিরে সারাদেশব্যপী হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে ঘটে যাওয়া চরম ধ্বংসাত্মক নাশকতা আর অরাজকতা দেখে যতটুকু না অবাক হয়েছি তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছি হেফাজতের বিরুদ্ধে সরকারের নীরবতা আর শীতলতা দেখে!

জাতির জনকের ম্যুরাল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং দেশের বিভিন্ন থানা ও সরকারি অফিসে অগ্নিসংযোগসহ বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করে যে ঔদ্ধত্য তারা দেখিয়েছে তা যদি হেফাজত বাদে অন্য কেউ করতো তাহলে নিশ্চয় সরকারের পক্ষ থেকে আমরা অন্যরকম আচরণ দেখতাম!

হুকুমের আসামি হিসেবে নিশ্চয় এতক্ষণ হেফাজতের আমির মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরী বা যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকরা গ্রেপ্তার হয়ে যেতো যদি শুধু তারা হেফাজতের কেউ না হয়ে অন্যকোন সংগঠনের কেউ হতো! এমনকি খোদ আওয়ামী লীগের কেউ হলেও হয়তো এমন ছাড় পেতো না যতটা ছাড় বাবুনগরী বা মামুনুলরা পাচ্ছে!

লক্ষ্য করলাম, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী বিভিন্ন বক্তৃতা বিবৃতিতে এইসব ঘটনার উল্লেখ করতে গিয়ে "উচ্ছৃঙ্খল জনতা' শব্দটি ব্যবহার করছে! হেফাজতের নাম পর্যন্ত নিতে সাহস করছে না! কি অবিমৃষ্যকারী দুর্বলতা! যেন 'ভাসুরের নাম মুখে নিতে মানা!' অথচ বাস্তবতা হলো বাবুনগরী বা মামুনুলরা শুধু সরকারের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেনি তারা এই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছে! দু'লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম আর ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এই 'রাষ্ট্র'টির বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছে!

বাবুনগরী বা মামুনুলদের সাথে আলগা পিরিত বা গরল রাজনৈতিক সমীকরণের কারণে সরকার তার বিরুদ্ধে বাবুনগরী বা মামুনুলদের বিরুদ্ধাচারণ মেনে নিলেও 'রাষ্ট্র'র বিরুদ্ধে বাবুনগরী বা মামুনুলদের এই বিরুদ্ধাচারণকে সরকারের মেনে নেওয়া মোটেও উচিৎ হয়নি! তাদের এভাবে ছাড় দেওয়া মোটেও উচিৎ হয়নি!

আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে এই বাবুনগরী বা মামুনুলদের পূর্বসূরিদের বিরুদ্ধে মরণপণ যুদ্ধ করে যে শহীদেরা তাদের বুকের তাজা রক্ত ঝরিয়ে দিয়ে এই রাষ্ট্রটি আমাদের উপহার দিয়েছিলো সেই শহীদদের আত্মা নিশ্চয় একদিন বাবুনগরী বা মামুনুলদের সাথে সরকারের এই আপোষকামিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে!

আপনার মন্তব্য

আলোচিত