আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল

০৪ এপ্রিল, ২০২১ ১৫:১৬

মামুনুলের পক্ষে অশিক্ষিতদের সাফাই অস্বাভাবিক নয়

আমি প্রায়ই কথা প্রসঙ্গে বলি যে, বেশিরভাগ মোল্লা নাস্তিক। অনেক আলেম বলেছেন, ইসলামী শিক্ষার একটি পর্যায়ে মনে কিছু প্রশ্ন জাগে, যা জিজ্ঞেস করলেও তাকে বহিষ্কার করা হবে। এ প্রশ্নগুলোর জবাব পাওয়ার মতো রিসোর্স তাদের থাকে না। এ অবস্থায় একটি অংশ নাস্তিক হয়ে পড়ে, কিন্তু প্রকাশ করতে পারে না। তখন তারা ইসলামকে শুধুমাত্র পেশা হিসেবে গ্রহণ করে। যেমন: মওদুদী ও সৈয়দ কুতুব যে মতবাদ দিয়েছে, এমন লেখা কোনো ঈমানদার মুসলিমের পক্ষে লেখা সম্ভব নয়। নাস্তিকরা যখন ইসলামকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে তখন তাদের মূল ফোকাস হয় আল্লাহ ও রাসুল অপেক্ষা মোল্লাদের ইমেজ যেন বেশি প্রাধান্য পায়। এ কারণেই মোল্লারা যত অপরাধ করুক না কেন, অনুসারীরা তার পক্ষে বলে। নিজেদের অজান্তেই তারা তাদের নেতাদের মাবুদের স্থান দেয়।


মামুনুল হকের পক্ষে অশিক্ষিত উগ্র একটি গোষ্ঠী সাফাই দেবে এটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু হাসান জামিল, গুগল আলেম মিজানুর রহমান আজহারি, আজিজুল জেহাদিসহ অনেক মোল্লাই লাজলজ্জার মাথা খেয়ে প্রমাণিত একটি মিথ্যার পক্ষ নিয়েছে। উগ্রতা, মিছিল, বিক্ষোভ, ভাঙচুর, জেনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে কোরআন হাদিসের সুস্পষ্ট নির্দেশনা অমান্য করলেও মামুনুলের মাস্তি জায়েজ করতে কোরআনের আয়াত ব্যবহার করছে! মোল্লাদেরকে অপছন্দ করি কারণ পছন্দ করার মতো দৃষ্টান্ত তারা দেখাতে পারে না।


মামুনুল হক শহীদুলের স্ত্রীকে নিয়ে সোনারগাঁও গেছেন মৌজমাস্তি করতে। তার যদি সততা থাকতো এবং জান্নাত যদি তার দ্বিতীয় স্ত্রী হতো, তাহলে সে সেই নাম লিখেই হোটেলে উঠতো। কিন্তু রেজিস্ট্রারে নাম লিখেছে প্রথম স্ত্রীর। জিজ্ঞাসাবাদেও প্রথম স্ত্রীর নাম বলেছে। পরবর্তীতে দেখা গেলো মিথ্যা বলেছে। স্ত্রীকে ফোন করে পরামর্শ দিয়েছে, শহীদের স্ত্রীকে বিয়ের কথা যেন সে স্বীকার করে। এদিকে জান্নাতের কথোপকথনে জানা যাচ্ছে, তাদের কোনো‌ বিয়ে হয়নি। "কলেমা পড়ে বিয়ে হয়েছে" এই মর্মে স্বীকৃতি দিতে শিখিয়ে দেয়া হয়েছে তাকে। অন্যদিকে জান্নাত আরা ঝর্ণার স্বামী ও দুই ছেলে জানতে চাচ্ছে, বন্ধুর স্ত্রীকে নিয়ে মামুনুল কেন এসব করেছে!

এত কিছুর পরও অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও প্রায় অশিক্ষিত গোষ্ঠীর কাছে সবই মিথ্যা, মামুনুল মহাপুরুষ!


বিভিন্ন ইস্যুতে যখন প্রচারণা চলে, তখন অনেকে ক্রিয়েটিভি ও ‘বলদিভিটি’ ধরে রাখতে পারে না। নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মামুনুলের ছবি বসানো হয়, পুরোনো কোনো ছবি এনে বর্তমানের বলা হয়। এবারও দেখছি মামুনুল হক ও শহীদুলের যৌথ মালিকানার স্ত্রীর মূল ছবির সঙ্গে অন্য ছবি যুক্ত করা হয়েছে। আমাদের তো প্রতিক্রিয়াশীল ধর্মান্ধচক্রের মতো মিথ্যা প্রচারণা দরকার নাই! একই কাজ ধর্মান্ধরা করছে; রিসোর্টে তোলা জান্নাত আরার ছবিকে যুবলীগ নেতার স্ত্রী বলে প্রচার করছে।

‘বলদিভিটি’ দেখানো একদল ছাগল অডাসিটি সফটওয়্যারের স্ক্রিনশট দিয়ে বলছে ডিপ ফেইক অডিওর মাধ্যমে বিভিন্ন ফোনালাপ নকল হয়েছে! ইউটিউব শিক্ষিত হলে যা হয়, ডিপ ফেইক কি সেটাই জানে না! ডিপ ফেইক প্রযুক্তি হচ্ছে ভিডিওর জন্য; এটি প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। এছাড়া উদ্ভট দাবি করছে- অডিও ক্লোনিংয়ের। যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসেইন সাঈদীর নারী কেলেঙ্কারির পর এবার মামুনুল হকের জন্য এই সাফাই দেয়া হলো। পৃথিবীর সব ফোনালাপ সঠিক শুধু সাঈদী ও মামুনুলদের ছাড়া!

মোল্লাদের চরিত্র এত নিম্নমানের আমার জানা ছিল না! এদের মধ্যে ন্যূনতম মাত্রায়ও ন্যায়, সততা, সত্যবাদিতা, সৌজন্য ও তাকওয়া নেই। এদেরকে কঠোরভাবেই দমন করা উচিত।

আব্দুল্লাহ হারুন জুয়েল: সাবেক ছাত্রনেতা

আপনার মন্তব্য

আলোচিত