আরিফ জেবতিক

২৩ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:৫৬

প্রধানমন্ত্রী করেন, শিক্ষামন্ত্রী কেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন না

শিক্ষামন্ত্রীর প্রেস ব্রিফিংয়ের সারমর্ম হলো, ‘অবশ্যই বিচার মানি, তবে বিচার শুরু হওয়ার আগে তালগাছটা আমার বাসায় দিয়ে আসো।’

ডিজিটাল সরকারের প্রধানমন্ত্রী যখন ভার্চুয়াল মিটিং করে দেশের অনেক বড় বড় সমস্যার সমাধান হরহামেশা করছেন, তখন শিক্ষামন্ত্রী কেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে ভার্চুয়ালি বৈঠক করতে পারবেন না, সেটা বুঝে আসে না।

শিক্ষামন্ত্রী তাঁর স্বভাবসুলভ মিষ্টি কথার আড়ালে বারবার যা বলতে চেয়েছেন বলে আমার মনে হচ্ছে, যে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেছে, শিক্ষার্থীদেরকে বাইরের লোকজন ইন্ধন দিচ্ছে, শিক্ষার্থীদের কাছে বারবার শিক্ষকরা যাওয়ার চেষ্টা করছেন কিন্তু যেতে পারছেন না- সোজা কথায় সব দোষ ছাত্রদের, ছাত্রদের, ছাত্রদের।

দুর্ভাগ্য যে, আমাদের সাংবাদিকরা সঠিক সময়ে সঠিক প্রশ্ন করতে পারেন না। আমার জানার আগ্রহ ছিল যে যদি এমন হয়েও থাকে যে শিক্ষার্থীরা ভিসির উপরে আগে হামলা করার চেষ্টা করেছিল, তাহলে সেই দায়ী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যেত। বহিস্কার করা যেত এমনকি ফৌজদারি মামলাও করা যেত। সেটা না করে, সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ একটি ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশ লেলিয়ে দেয়াটা কোন বিচারে শিক্ষামন্ত্রী জাস্টিফাই করার চেষ্টা করছেন, সেটা স্পষ্ট জানার দরকার ছিল।

শিক্ষামন্ত্রী বুঝাতে চেয়েছেন যে, গত ৪ বছর ভার্সিটি শান্ত ছিল, সেই শান্ত রাখার কৃতিত্বের কারণেই বর্তমান ভিসিকে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী নিজে বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছেন যে, ভার্সিটি আর কারাগার এক বিষয় নয়। ভার্সিটিতে সকল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রেখে, ছাত্রছাত্রীদের সাথে কথা বলতে যাদের ঠ্যাকা নেই কিংবা চাষাভুষাদের থেকে গা বাঁচিয়ে চলা অমানবিক মানসিকতার মানুষ দিয়ে 'তেড়েমেড়ে ডাণ্ডা, করে দেব ঠাণ্ডা' করে অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট তৈরি করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আসলে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাঙ্ক্ষিত নয়।

দলবাজ লাঠিয়ালদের দিয়ে আর যাই হোক, বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর মাঝে কোনো কৃতিত্ব নেই।

আরিফ জেবতিক: অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট

আপনার মন্তব্য

আলোচিত