শাহআলম সজীব

২৩ জানুয়ারি, ২০২২ ২২:০৭

সরকারের বিরোধিতা করতে গিয়ে দেশবিরোধিতা

শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে সরকারের বিরোধিতা করতে গিয়ে দেশের বিরোধিতা দুনিয়ার আর কোনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দল করে কিনা আমাদের জানা নেই। তবে আমাদের দেশে সরকারের বিরোধিতা করতে গিয়ে দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়াটাই যেন এখন সরকারের বিরোধিতার অংশ!

এরআগে দেখেছিলাম তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া মার্কিন একটি সাময়িকীতে আর্টিকেল লিখেছিলেন, সেখানে তিনি বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিলের কথাও বলেছিলেন। ফলে আমেরিকা আমাদের দেশের জিএসপি সুবিধা বাতিল করে রেখেছিল দীর্ঘদিন।

পদ্মাসেতুর বিষয়টা তো চোখের সামনে। আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মাসেতু করে ফেলছে, এই সেতু হয়ে গেলে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা এবং জনসমর্থন বেড়ে যাবে সারাদেশে, তাই পদ্মাসেতুর বিরোধিতা করতেই হবে, যাতে এই সেতু না হয়। তারপর লবিং করে অপপ্রচার রটানো হলো পদ্মাসেতুতে দুর্নীতি হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। অথচ তখনো পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংক কিংবা জাইকা কোনো অর্থায়নই করেনি, একটা পয়সাও ছাড় দেয়নি। ড. মুহম্মদ ইউনুস সব চেষ্টাই করেছেন তার হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে, তাই দাতাসংস্থাগুলো একটা অজুহাত খুঁজতেছিল পদ্মাসেতু থেকে সরে যাওয়ার, সেজন্য এই দুর্নীতির মিথ্যে অভিযোগ।

একপর্যায়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিলেন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু হবে। তারপরেরটা ইতিহাস। কানাডার আদালতেও দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকসহ দাতা সংস্থাগুলো আবার পদ্মাসেতুতে অর্থায়ন করতে চায়। কিন্তু শেখ হাসিনা 'না' করে দিলেন।

সরকারবিরোধীরা কোনোঘাটে জায়গা না পেয়ে এবার ষড়যন্ত্রে মেতেছে অন্যভাবে। বহুদিন থেকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করে সরকারের বিরোধিতার নামে দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তারা! বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২০১৯ সাল থেকেই একের পর এক চিঠি দিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন কংগ্রেস এবং সিনেটরদের কাছে। পাশাপাশি বিএনপির নিয়োগকৃত লবিস্ট ফার্ম একের পর এক মিথ্যাচার করে যাচ্ছে সরকারের বিরুদ্ধে। তারই অংশ হিসেবে র‍্যাবের শীর্ষ কিছু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এবার ওই লবিস্ট ফার্ম জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কর্মরত পুলিশ, র‍্যাব এবং সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যদের ফেরত পাঠানোর জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে।

দুনিয়ার ইতিহাসে আর কোনো দেশে এমন রাজনীতি সরকারবিরোধীরা করে কিনা আমাদের জানা নেই। রাজনৈতিক সরকারের সাথে মতপার্থক্য থাকতেই পারে বিরোধীদলগুলোর, কিন্তু সেই মতপার্থক্য থেকে দেশের বিরোধিতা! অন্যকোনো দেশ হলে এতক্ষণে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা হতো, কিন্তু আফসোস মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের জন্য। এখানে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হলে একশ্রেণির কথিত বুদ্ধিজীবী তাদের পক্ষে দাঁড়িয়ে যাবেন, বিবৃতি দেবেন, সরকারের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধারে নেমে পড়বেন। কিন্তু সরকারবিরোধীদের এই দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড নিয়ে তারা কিছুই বলবে না। সুনসান নীরবতা তাদের মাঝে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত