এস এম নাদিম মাহমুদ

২৫ জানুয়ারি, ২০২২ ১৬:৩৬

আন্দোলনে ‘তৃতীয় পক্ষ’ দেখতে পাওয়া অস্বস্তিকর

আমার বিশ্বাস দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ে ধারণ করে দেশটাকে ভালোবেসে এগিয়ে নিচ্ছে তারা। ক্ষমতাসীন সরকারের কিছু কর্মকাণ্ডে তারা সন্তুষ্ট না হলেও, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে তারা নয়। আমার জানা মতে, গত দশ বছরেও এমন কোন ক্যাম্পাস নেই, যেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সরকার বিরোধীতে রূপ নিয়েছে কিংবা সরকারকে সরানোর জন্য বিক্ষোভ হয়েছে, বরং তারা সরকারের ভুল-সিদ্ধান্তগুলোর প্রতিবাদ করে এসেছে। আর এই প্রতিবাদ করতে তাদেরকে বঙ্গবন্ধুই শিখিয়েছে।

ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে কালিমা লেপনের জন্য 'তৃতীয় পক্ষের' লম্বা হাত দেখতে পাওয়া সত্যি অস্বস্তিকর।

সব কিছুতে রাজনৈতিক গন্ধ খুঁজতে নেই। যেসব ছেলে-মেয়ে শাবিতে উপাচার্য পদত্যাগে নেমেছে, সেইসব ছেলে-মেয়েকে সরকারবিরোধী শিবিরে নিয়ে যাওয়া, একধরনের বোকামি। স্রেফ কিছু ছেলে-মেয়ের মনে সরকারের প্রতি বিদ্বেষী মনোভাব তৈরি করা ছাড়া কিছু নয়। মনে রাখবেন, আজকের শাবির হাজার হাজার ছেলে-মেয়েদের যৌক্তিক দাবিকে আপনি যদি সম্মান না দেখান, এরাই এক সময়ে দেশটা চালাবে, তখন তাদের ভিতর জমে থাকা এই ক্ষোভ আপনাদের প্রতি খারাপ লাগা তৈরি করবে। এইসব ছেলে-মেয়েই একদিন আপনার দপ্তর, অধিদপ্তরের প্রধান হবে, তাদের হাতেই এই রকম ফরিদ উদ্দিনের নিয়োগের যোগ-বিয়োগ কষবে।

আজকে একজন ফরিদ উদ্দিন বিদায় নিলে, আপনি চাইলে শত শত ফরিদ উদ্দিনের ন্যায় অধ্যাপক পাবেন, চাইলে তাদেরকেই উপাচার্য চেয়ারে বসাতে পারবেন। তবে এই কোমলমতি ছেলে-মেয়েদেরকে নিয়ে নোংরামি করবেন না। এদের হাতে আগামীর বাংলাদেশ, তাই তাদেরকে দেশটা গড়তে সহায়তা করুন। তাদের ভুল ধরার জন্য বসে থাকবেন না, বরং উপাচার্যকে সরিয়ে আপনাদের ভুলগুলো সংশোধন করুন। এরা কেউ আপনার জন্য ভয়ের কারণ নয়, এরা সবাই বাংলাদেশ গড়ার কারিগর।

সবাইকে শত্রু ভাবলে, এক সময় দেখা যাবে নিজের পাশের চেয়ারটিও শক্র হয়ে যাচ্ছে।

এস এম নাদিম মাহমুদ: গবেষক, ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত