সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

২৯ জুলাই, ২০১৬ ২২:১৫

‘সুন্দরবন কী আড়িয়াল বিলের চেয়ে মূল্যহীন? কারা এসব বোঝাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে?’

সম্প্রতি সুন্দরবনের অদূরে রামপালে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র করার জন্য ভারতের একটি সংস্থার সাথে চুক্তি করেছে সরকার। পরিবেশবিদরা শুরু থেকেই এই প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের আশঙ্কা এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হলে ধ্বংস হয়ে যাবে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সুন্দরবন।

দেশের বাম দলগুলোও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সমালোচনা হচ্ছে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কিন্তু সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়নে অনঢ়। সরকারের পক্ষ থেকে পরিবেশের ক্ষতি হবেনা বলে বারবার বলা হচ্ছে। এমনকি কদিন আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন পরিবেশের কিছুটা ক্ষতি হলেও এই প্রকল্প বাতিল হবেনা।

এ ব্যাপারে প্রবাসী সাংবাদিক ফজলুল বারী ফেসবুকে এক পোস্টে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, " সুন্দরবনের ক্ষতি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে কারা বোঝাচ্ছে বোঝাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে? বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামীলীগ,  সেই দলের নেত্রী শেখ হাসিনাকে সুন্দরবন হত্যাকারীর তকমা পরিয়েননা প্লিজ।"


বারী লিখেছেন:

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে জেদাজেদির মাত্রা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে গেছে! অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে সে ইংগিত আছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, সেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে সুন্দরবনের ক্ষতি হলেও এটি নড়বে না! কি ভয়ংকর কথা! মানুষের প্রতিবাদের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার আড়িয়াল বিলের জমিতে বিমান বন্দর করার কর্মসূচি বাদ দেয়। সুন্দরবন কী আড়িয়াল বিলের চেয়ে মূল্যহীন? কারা এসব বোঝাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে? বিদ্যুৎ আমাদের দরকার। আপনারা এরমাঝে অনেক বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছেন। আপনাদের প্রতি দেশের মানুষ কৃতজ্ঞ। কিন্তু এক রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানালেই দেশের বাকি বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবেনা। এমন আরও অনেকগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানাতে হবে। কিন্তু আমাদের অনেকগুলো সুন্দরবন নেই। সুন্দরবনের হরিণ, বাঘগুলোর বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে বিদ্যুৎ? মিনতি করি এসব জংলী চিন্তা বাদ দিন। মানুষের মনের কথাগুলো পড়ুন। বিশেষ করে দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিক প্রিয় প্রজন্মদের মনের কথাগুলো।

প্রতীকী একটা ছবি দেখলাম অনলাইনে! টাকার ভিতরের হরিণগুলো ভয়ে টাকার বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে! এসব দেখে চোখ ভিজে আসে। প্রধানমন্ত্রীকে আবার একবার সুন্দরবন নিয়ে যান। বনের ভিতরের অভয়ারণ্যগুলো ঘুরিয়ে দেখান। বন বাঁচাতে যেখানে বনের ভিতরের নদীতে মাছ ধরা পর্যন্ত নিষেধ সেখানে কে কেন বন ধ্বংসের  ফর্মুলা গিলিয়েছে সরকারকে?

এদেশটা স্বাধীন হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। বাংলাদেশের অনেক কীর্তি এ দলটির কৃতিত্ব। এখন পদ্মা সেতু হচ্ছে। সেই দলটি, সেই দলের নেত্রী শেখ হাসিনাকে সুন্দরবন হত্যাকারীর তকমা পরিয়েননা প্লিজ। এক বালতি দুধ নষ্ট করতে এক ফোটা চোনাই যথেষ্ট। এরমাঝে দেশের মানুষকে যত বিদ্যুৎ দিয়েছেন, সুন্দরবনের অস্তিত্বের প্রশ্নে জেদাজেদিতে অটল থাকলে কিন্তু পণ্ড হয়ে যাবে সব অর্জন! পাগলওতো নিজের স্বার্থ বোঝে। সুন্দরবন ধ্বংস  বাংলাদেশের স্বার্থ হতে পারেনা।

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত