সিলেটটুডে ডেস্ক

২৪ ফেব্রুয়ারি , ২০১৯ ১২:০৮

কানেকটিকাটে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন

যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটে বিনম্র শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায় উদযাপিত হয়েছে মহান একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলাদেশীদের আমব্রেলা সংগঠন খ্যাত বাংলাদেশী-আমেরিকান এসোসিয়েশন অব কানেকটিকাট (বাক) নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করে স্মরণ করে ভাষা শহীদদের।

কানেকটিকাটের ২৭০০ বার্লিন টার্নপয়েকে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশের স্মৃতিচারণ, আলোচনা, শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

২০ ফেব্রুয়ারি বুধবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া নানান কর্মসূচি শেষ হয় অস্থায়ী শহীদ মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর মধ্যে দিয়ে।

বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয় সন্ধ্যে ৬টায়। এ সময় ভাষার জন্য আত্মদানকারী শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সংগঠনের সভাপতি মইনুল হক চৌধুরী হেলালের সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ূন চৌধুরী ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মিথিলা মারলিন গোমেজের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আজিজুর রহমান।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাকের সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান কামাল, সহসভাপতি নূরুল আলম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জয়ন্ত নাগ, মুক্তিযোদ্ধা মাইকেল শাহ, কানেকটিকাট স্টেট আওয়ামী লীগ সভাপতি জুনেদ এ খান, কানেকটিকাট স্টেট বিএনপির সভাপতি তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু, বাংলাদেশ খ্রিস্টিয়ান এসোসিয়েশন বিসিএসি’র সহসভাপতি সমির দত্ত, বৃস্টল ফ্রেন্ডস সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজ, কোষাধ্যক্ষ মো. রহমান রাজু, মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, আওয়ামী লীগ নেতা জিহাদুল হক জিয়াদ, কানেকটিকাট স্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বদরুল চৌধুরী, ভাষা সৈনিক শামসুল আলমের কন্যা তাহমিনা জাফর প্রমুখ।

এদিকে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে সিয়াম মাসুদ, ২য় স্থান অর্জন করে সুমাইয়া মাসুদ, যৌথভাবে তৃতীয় স্থান অর্জন করে নাবিলা তাবসুন ও তাহমিদ আম্বিয়া, ৪র্থ স্থান অর্জন করে এথেনা, ৫ম স্থান অর্জন করে রাহিম রহমান, ৬ষ্ঠ স্থান অর্জন করে প্রাচুর্য, ৭ম স্থান অর্জন করে দাহির, ৮ম স্থান অর্জন করে আহনাফ, ৯ম স্থান অর্জন করে ইহান এবং ১০ম স্থান অর্জন করে রিয়া। এছাড়া অংশগ্রহণকারী সকল শিশুকে সান্ত্বনা পুরস্কার প্রদান করা হয়।

পরে সাংস্কৃতিক সম্পাদক মিথিলা মারলিন গোমেজের পরিচালনায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় শিল্পী হৃদয় রোজারিও, তৃপ্তি এথেনা এবং কবিতা আবৃত্তি করেন সুলেখা পলেসা আন্না ও তৃপ্তি। শিল্পীদের মনোজ্ঞ পরিবেশনা গভীর রাত পর্যন্ত দারুণভাবে উপভোগ করেন দর্শক-শ্রোতারা।

নানা কর্মসূচির পর একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ বেদীতে ফুল দেয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়। একে একে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান আয়োজক সংগঠনসহ অন্যান্যরা। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশী-আমেরিকান এসোসিয়েশন অব কানেকটিকাট (বাক), কানেকটিকাট স্টেট আওয়ামী লীগ, কানেকটিকাট স্টেট বিএনপি, বাংলাদেশ খ্রিস্টিয়ান এসোসিয়েশন বিসিএসি, বৃস্টল ফ্রেন্ডস সোসাইটি।

অনুষ্ঠানে বক্তারা মহান একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। বক্তারা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন মহান ভাষার জন্য আত্মদানকারী শহীদের।

তারা বলেন, এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্ম বাংলা ভাষার ইতিহাসের সাথে পরিচিত হবার সুযোগ তৈরি হয়েছে, বাংলা ভাষা চর্চায় তারা আগ্রহী হবে।

সভাপতি মইনুল হক চৌধুরী হেলাল প্রবাসে বাংলা ভাষার বিস্তার এবং ভাষা শহীদদের স্মরণে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস অনুষ্ঠান সফল করার জন্য বাকী সদস্যসহ উপস্থিত কানেকটিকাট প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

তিনি অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণসহ অনুষ্ঠান বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য সংগঠনের সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান কামাল, সহসভাপতি নূরুল আলম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আজিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ূন চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ তারেক খান, সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক আব্দুল মুমিত মামুন, কার্যকরী সদস্য জাহিদ সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান।

বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করা কানেকটিকাটের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা শ্রেণি-পেশার বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে উদযাপন করেন দিবসটি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত