এ কে শেরাম

২৩ এপ্রিল, ২০১৮ ১৯:১৬

মণিপুরির কলঙ্কিত দিন আজ

আজ ২৩ এপ্রিল, 'খোংজোম ডে'; মণিপুরি জাতির ইতিহাসে এক অন্ধকার ছড়ানো কলঙ্কিত দিন।

১৮৯১ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফালের ৩২ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত খোংজোম নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ইতিহাসের এক বর্বরতম যুদ্ধের ঘটনা।

প্রায় সমগ্র পৃথিবী শাসন করা ব্রিটিশ শক্তির লোলুপ দৃষ্টি ছিলো মণিপুরের উপর। তাই এক অজুহাতে এই দিন তারা বিশাল বাহিনী নিয়ে তিন দিক থেকে আক্রমণ করে মণিপুর। পরাজয় নিশ্চিত জেনেও মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে প্রতিরোধ গড়ে তোলে মণিপুরিরা। খোংজোম নদীর তীরে সংঘটিত হয় ভয়াবহতম যুদ্ধ এবং ঐ যুদ্ধে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ মণিপুরি বাহিনী ন্যূনতম অস্ত্রবল ছাড়াই শুধুমাত্র মাতৃভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসাকে সম্বল করে অসমসাহসিকতায় প্রতিরোধ করে ব্রিটিশ বাহিনীকে।

সেখানে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেন পাওনা ব্রজবাসী, চিংলেনসানাসহ অনেক বীর।

মণিপুরিদের সাহস ও আত্মত্যাগের বিরল দৃষ্টান্ত সেদিন প্রশংসা কুড়ায় শত্রু বাহিনীরও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অস্ত্র ও কৌশলের কাছে পরাজিত হয় মণিপুরিরা।

২৭ এপ্রিল খোংজোম নদীর তীরে অস্তমিত হয় মণিপুরের স্বাধীনতা সূর্য। একদিন পলাশীর আম্রকাননে অস্তমিত হয়েছিলো বাংলার যে স্বাধীনতা সূর্য, প্রায় দুশো বছর পর মেহেরপুরের আম্রকাননে এক রক্তসাগর পেরিয়ে আবার উদিত হয়েছিলো সেই সূর্য; তেমনি খোংজোম নদীর তীরে সাম্রাজ্যলিপ্সু ব্রিটিশদের অপকৌশলের কাছে পরাজিত হয়ে অস্তমিত হওয়া মণিপুরের স্বাধীনতার সূর্য সময়ের পথ-পরিক্রমায় একদিন নিশ্চয়ই আবার উদিত হবে নূতন রক্তরাগে রঞ্জিত হয়ে।

খোংজোম বীরদের জানাই অমলিন শ্রদ্ধা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত