সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ আগস্ট, ২০১৭ ০২:০৯

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে বোমা হামলায় আট সেনাসহ নিহত ১৫

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায় একটি সামরিক ট্রাককে লক্ষ্য করে শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় আট সেনা সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া অন্তত ৩২ জন আহত হয়েছে, যাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন বেলুচিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি।

শনিবার রাতে কোয়েটার পিশিন জেলার একটি বাসস্ট্যান্ডে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। বিস্ফোরণের পরপরই ওই এলাকায় আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। আগামী ১৪ আগস্ট পাকিস্তানিরা দেশটির স্বাধীনতা অর্জনের ৭০তম বার্ষিকী উদযাপন করবে। এর ঠিক দুদিন আগে এ হামলার ঘটনা ঘটলো।

পাকিস্তানের দৈনিক দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানায়, কোয়েটার যে এলাকায় বিস্ফোরণটি ঘটেছে সেটি একটি হাই সিকিউরিটি এলাকা, যা সব সময় কড়া নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা থাকে। ওই এলাকায় সীমান্তরক্ষায় নিয়োজিত আধা সামরিক বাহিনীর 'ফ্রন্টিয়ার কনস্টাবুলারি' সদর দফতর, বেলুচিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদ, মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন, গভর্নর হাউজ ও বেলুচিস্তান হাইকোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলো অবস্থিত।

সেখানে একটি সামরিক ট্রাককে লক্ষ্য করে বোমাটি ছোড়া হয় বলে জানান প্রাদেশিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি। তবে ট্রাকটিকে লক্ষ্য করে আত্মঘাতী, না রিমোট কন্ট্রোল বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আশেপাশের ভবনগুলোর প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দে তাদের ঘরের দরজা-জানালা কেঁপে ওঠে। এ ঘটনার পরপরই পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলটি ঘিরে ফেলে। এ সময় সেখানে থাকা বিভিন্ন যানবাহনে আগুন জ্বলতে দেখা যায় বলে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী পাকিস্তানের সামা টিভিকে বলেন, আমি অটো রিকশায় করে বাড়ি যাওয়ার সময় বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। দৌড়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমি সেখানে আহত জওয়ানদের পড়ে থাকতে দেখি।

তিনি বলেন, আক্রান্তদের অনেকের শরীর এমনভাবে পুড়ে গেছে যে তাদের চেনার উপায় নেই।

পুলিশ জানায়, বিস্ফোরণের ধরণ সম্পর্কে এখনও তারা নিশ্চিত হতে পারেননি। এ জন্য ঘটনাস্থলে বোমা নিস্ক্রিয়করণ ইউনিটকে ডাকা হয়েছে।

উদ্ধার কর্মীরা জানায়, বিস্ফোরণস্থল থেকে নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে কোয়েটা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আহতদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে বলে জানান হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. ওয়াসিম বাগ।

তিনি জানান, ১১টি লাশ ও ৩০জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

এদিকে টুইটারে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গফুর জানান, কোয়েটায় হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া

একে 'সন্ত্রাসবাদী হামলা' আখ্যা দিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, পাকিস্তানের আসন্ন স্বাধীনতা দিবসের উৎসবকে নস্যাৎ করতেই কোয়েটায় এ হামলা চালানো হয়েছে।

তবে কোনও বাধাই পাকিস্তানিদের দৃঢ়তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারবে না বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জেনারেল বাজওয়া।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত