সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ জানুয়ারি, ২০১৮ ০১:০০

‘পাকিস্তান ওই জানাজার নিচে চাপা পড়েছে’

‘জানাজা যত ছোট হয়, ততটাই ভারি হয়। এরকমই ছোট্ট একটি জানাজা হয়েছে কসুরের রাস্তায়। পুরো পাকিস্তান ওই জানাজার নিচে চাপা পড়েছে।’

পাকিস্তানের একটি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত সংবাদে এভাবেই বলেন সংবাদ পাঠিকা। তাঁর কোলে ছিল ছোট্ট একটি শিশু। পাকিস্তানের কসুর নামে এক শহরে গত সপ্তাহে জয়নাব আনসারি নামে ৮ বছরের একটি শিশুর লাশ পাওয়া যায় আবর্জনার স্তুপে। জানা যায়, ওই শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করে ফেলে রাখে দুর্বৃত্তরা।

 কিরান নাজ নামে ওই পাঠিকা জানান, ওই শিশুর খবর জানাতেই নিজের কন্যাশিশুকে নিয়ে হাজির হয়েছেন তিনি। খবরের সময় বারবারই কান্নায় ভারি হয়ে আসে নাজের কন্ঠস্বর।

এনডিটিভি জানায়, সামা টিভি নামে পাকিস্তানের ওই চ্যানেলে গত বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাতটায় সংবাদ পাঠ করেন কিরান নাজ। তখনই নিজের কন্যা শিশুকে কোলে রেখে নিহত জয়নাবের প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি।

নাজ বলেন, ‘আজ আমি কিরান নাজ না। আজ আমি একজন মা। এই জন্যেই আমার শিশুর সঙ্গেই বসে আছি। এই দেশে অনেক বড় বড় লোক আছে। চোখের পলকে এত লোকের মৃত্যুর ঘটনা কোনো সাধারণ কথা না। কে হত্যা করছে, কেনো হত্যা করছে, এই প্রশ্নগুলোর জবাবও কখনো পাওয়া যায় না। কেউ ঠিক কথাই বলেছিলেন যে, জানাজা যত ছোট হয়, ততটাই ভারি হয়। আর এরকমই ছোট্ট একটি জানাজা হয়েছে কসুরের রাস্তায়। পুরো পাকিস্তান ওই জানাজার নিচে চাপা পড়েছে। অদ্ভুত ঘটনা, একদিকে বাবা ও মা শিশুর দীর্ঘায়ুর জন্যে দোয়া করছিলেন, এইদিকে কোনো হত্যাকারী ঐ জীবন শেষ করে দিচ্ছিল। একদিকে বাবা ও মা তাদের সন্তানদের জন্য খেলনা কিনছে, আর এইদিকে কেউ সেই শিশুর লাশ আবর্জনা স্তুপে ছুঁড়ে ফেলছিল।’

গত ৪ জানুয়ারি অপহরণ করা হয় শিশু জয়নাবকে। পাঁচদিন পর একটি আবর্জনার স্তুপে পাওয়া যায় জয়নাবের লাশ। ওই শিশুর বাবা ও মা সৌদি আরব ছিলেন। ঘটনার পর তাঁরা পাকিস্তানে ফিরে আসেন। জয়নাবের বাবা ও মা জানিয়েছে, হত্যাকারী আটক না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা শিশু জয়নাবের দাফন করবেন না।

ওই ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বস্তরে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়ে উঠেছে দেশটি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত