সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ এপ্রিল, ২০১৮ ১১:০১

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে পশ্চিমবঙ্গে নিহত ১৩

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও আশপাশের জেলাগুলোতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভারী বর্ষণ ও বজ্রসহ কালবৈশাখী ঝড়ে কমপক্ষে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েকশ মানুষ।

স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের বরাতে এনডিটিভি ও আনন্দবাজার জানিয়েছে, প্রথম কালবৈশাখী ঝড়টি ওঠে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ৭টা ৪২ মিনিটে। এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৪ কিলোমিটার। আর দ্বিতীয়টির ছিল ঘণ্টায় ৯৮ কিলোমিটার। সেটি শুরু হয় ৭টা ৫৫-তে।

কলকাতা এবং সল্টলেকের বিভিন্ন রাজপথে অন্তত দেড়শ’ গাছ ও গাছের ডাল ঝড়ে ভেঙে পড়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। বেহালা পর্ণশ্রীর ডায়মন্ড হারবার রোডে গায়ে গাছ পড়ে মারা গেছেন নিরুষ মিঞ্জ (৬৫)। লেনিন সরণীতে অটোরিক্মার ওপর গাছ পড়ে মারা যান অটোচালক মানোয়ার আলম (৫১) ও যাত্রী আমরিন জাভেদ (২৭)।

অন্যদিকে আনন্দপুরের পশ্চিম চৌবাগায় বাড়ি ভেঙে মৃত্যু হয় মোহাম্মদ শাহিদের (৪০)। কলাকার স্ট্রিটে বহুতল ভবনের দেয়ালের একাংশ মাথায় ধসে পড়লে মারা যান অনীত শুক্ল (২৮)।

হাওড়ায় শুধু বেলুড়েই ঝড় কেড়ে নিয়েছে চার জনের প্রাণ। আনন্দবাজার জানিয়েছে, গিরিশ ঘোষ রোডে গাছ পড়ে মারা যান দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী খুশি মারিয়া (১৬)। গাছ ভেঙে ছিঁড়ে পড়া বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে তারাচাঁদ গাঙ্গুলি স্ট্রিটে ৪৫ বছরের এক সাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়। ওই সাইকেলে থাকা এক তরুণী আর এক শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক।কলকাতা-কালবৈশাখী ঝড়-পশ্চিমবঙ্গ

বেলুড়ের গাঙ্গুলি স্ট্রিটেও বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আন্দুল রোডে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জয়দেব দাস (২২) নামে এক বাইক আরোহীর মৃত্যু হয়। ডুমুরজলায় গাছ পড়ে মৃত্যু হয় মুনমুন দাসের (২৩)। বজ্রাঘাতে বাঁকুড়ার ইন্দাসের তেঁতুলমুড়িতে সুকুমার ঘোষ (৩৪) এবং হুগলির হরিপালে তুলি মুখোপাধ্যায় (১৭) মারা যান।

বিরূপ আবহাওয়ার কারণে কলকাতা থেকে দিল্লি, ভুবনেশ্বর ও আগরতলা যাওয়ার ফ্লাইটগুলো প্রায় দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় বন্ধ ছিল। কলকাতা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৪০টি গাছ ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। রেড রোড ও সাউদার্ন অ্যাভিনিউসহ বিভিন্ন এলাকায় গাড়ির উপর গাছপালা উপড়ে পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।

এ ছাড়া গাছ উপড়ে পড়ায় কয়েকটি স্থানে মেট্রো রেল চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। ঝড়ের সময় বেলগাছিয়া স্টেশনের নিকটে একটি মেট্রো ট্রেন আটকে যায় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দলের সদস্যরা মধ্যরাত পর্যন্ত সব যাত্রীদের উদ্ধার করেন।

ভারী বৃষ্টিপাতে দক্ষিণ কলকাতার বেহালাসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ঝড়ের কারণে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবাও ব্যাহত হয়। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী লোডশেডিং ও ট্রেনের বিলম্বের বিষয়ে অনেকেই টুইটারে অভিযোগ করেছেন।

প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ে হুগলি, হাওড়া, ২৪ পরগনা ও মেদিনীপুরসহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। সেসব স্থানে অনেকেই আহত হয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত