আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১২:৪০

পদত্যাগ করলেন বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী

পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী শালো মিশেল। অভিবাসন নিয়ে বিতর্কে ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান অংশীদার জোট ছাড়ার কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি এই পত্র জমা দিলেন।

মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) পার্লামেন্টের এক অধিবেশনে তার সংখ্যালঘু সরকার প্রয়োজনীয় সমর্থন লাভে ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দেন।

গত সপ্তাহে মরক্কোর মারাকেশ শহরে স্বাক্ষরিত জাতিসংঘের অভিবাসন চুক্তিতে বেলজিয়াম স্বাক্ষর করায় প্রতিবাদে ক্ষমতাসীন জোট ছাড়ে জাতীয়তাবাদী নিউ ফ্লেমিশ অ্যালায়েন্স (এন-ভিএ) ।

জাতিসংঘের ওই চুক্তিতে যোগ দেওয়ায় বেলজিয়ামে অভিবাসন বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা এন-ভিএর। চুক্তির বিরোধিতা করে এন-ভিএসহ দেশটির ফ্লেমিশ ডানপন্থি দলগুলো ব্রাসেলসে বিক্ষোভ মিছিল করার পর পদত্যাগপত্র পেশ করলেন প্রধানমন্ত্রী মিশেল।

বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপকে নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন মিশেল। এখন তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে কি না রাজা সে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ডানপন্থি একটি জোট গড়ার মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালে অক্টোবরে ক্ষমতায় এসেছিলেন বর্তমানে ৪২ বছর বয়সী মিশেল। ক্ষমতা গ্রহণকালে তার বয়স ছিল ৩৮। এর মাধ্যমে ১৮৪১ সালের পর থেকে তিনি বেলজিয়ামের সবচেয়ে তরুণ প্রধানমন্ত্রীতে পরিণত হন।

আগামী বছরের মে মাসে বেলজিয়ামে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মিশেলের পদত্যাগের সিদ্ধান্তে আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

জুলাইতে জাতিসংঘের ১৯৬ সদস্য রাষ্ট্র গ্লোবাল কম্প্যাক্ট ফর সেইফ, অর্ডারলি এন্ড রেগুলার মাইগ্রেশন চুক্তির বিষয়ে একমত হয়। গত সপ্তাহে মারাকেশে ১৬৪ দেশ চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউভুক্ত অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, ইতালি, পোল্যান্ড ও স্লোভাকিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করে।

চুক্তিটিতে অভিবাসনের বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক পদ্ধতি চাওয়া হয়েছে যেখানে ‘নিজ নিজ অভিবাসন নীতি নির্ধারণের বিষয়ে রাষ্ট্রগুলোর সার্বভৌম অধিকার পুনঃনিশ্চিত করা হয়’ এবং বৈধ অভিবাসনের ‘মৌলিক’ গুরুত্বের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। চুক্তিটি পালনে আইনি কোনো বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি।

মারাকেশ অভিবাসন চুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়ে মিশেল বলেছিলেন, এই চুক্তি ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আরও ভালো সুযোগ তৈরি করেছে।

কিন্তু ইউরোপীয় সমালোচকদের বিশ্বাস, এই চুক্তির ফলে ইউরোপে অভিবাসন আরও বৃদ্ধি পাবে।

ডানপন্থি দলগুলো ডাকে এই চুক্তির বিরোধিতা করে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে কয়েক হাজার লোক বিক্ষোভ দেখায়, সেখানে সহিংসতার ঘটনাও ঘটে।

ফ্লেমিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির যুব শাখার এক নেতা তখন মন্তব্য করেছিলেন, বেলজিয়াম এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করার আগে জনগণের মতামত নেওয়া সরকারের উচিত ছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত