আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৯ মার্চ, ২০১৯ ১২:৩৯

ঘুর্ণিঝড়ে মোজাম্বিকে নিহতের সংখ্যা হাজার ছাড়ানোর শঙ্কা

ঘূর্ণিঝড় ইদাইয়ের তাণ্ডবে মোজাম্বিকে নিহতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়াতে পারে। এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ফিলিপে নিয়ুসি।

সোমবার হেলিকপ্টারযোগে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকা পরিদর্শনের পর তিনি এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। নদীতে মৃতদেহ ভাসতে দেখার বর্ণনাও দিয়েছেন তিনি।

ঘূর্ণিঝড় ইদাই বৃহস্পতিবার সমুদ্র থেকে উঠে এসে ১৭৭ কিমি/ঘণ্টা বাতাসের গতিবেগ নিয়ে মোজাম্বিকের বন্দর শহর বেইরার নিকটবর্তী স্থলভাগে আঘাত হানে। ঘূর্ণিঝড়টির কারণে শহরটির রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে যায় ও বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে যায়। এতে মোজাম্বিকের চতুর্থ বৃহত্তম এ শহরটি কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

ত্রাণ দলগুলোর পক্ষে রোববারের আগে শহরটিতে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি। পাঁচ লাখ বাসিন্দার এই শহরটির প্রতিটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন জাতিসংঘের এক ত্রাণকর্মী।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর জেরাল্ড বুর্ক নামের এই কর্মী বলেন, কোনো ভবন অক্ষত নেই। পুরো শহরে বিদ্যুৎ নেই। টেলিযোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। ছিঁড়ে পড়া বৈদ্যুতিক তারগুলো রাস্তাগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। অনেক বাড়ির ছাদ ধসে পড়েছে, দেয়ালও ধসে পড়েছে। শহরটির অনেক বাসিন্দা তাদের বাড়ি হারিয়েছেন।

প্রবল ঝড়ো হাওয়া ও বন্যার পর মোজাম্বিকে সরকারিভাবে নিহতের সংখ্যা ৮৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের অধিকাংশই বেইরার আশপাশে নিহত হয়েছেন বলে শহরটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

রাজধানী মাপুতোতে থাকা সরকারি কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, ভেঙে পড়া গাছ ও উড়ে আসা বস্তুখণ্ডের আঘাতে দেড় হাজারেরও বেশি লোক আহত হয়েছেন।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী ঘূর্ণিঝড় ইদাইয়ের তাণ্ডবে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় কয়েকটি দেশে মৃতের সংখ্যা সরকারিভাবে অন্তত ৩০৪ জনে দাঁড়িয়েছে। রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট (আইএফআরসি) ক্ষয়ক্ষতিকে ‘ব্যাপক ও ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করেছে।

আইএফআরসির ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ টিমের প্রধান জেমি লেজ্যুর বিবিসিকে জানিয়েছেন, লোকজনকে গাছ থেকে উদ্ধার করতে হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টির তাণ্ডবে মোজাম্বিকের প্রতিবেশী জিম্বাবুয়ের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে অন্তত ৯৮ জন নিহত ও ২১৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। মোজাম্বিকের আরেক প্রতিবেশী দেশ মালাউয়িও ইদার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টি স্থলে আঘাত হানার আগে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় এখানে অন্তত ১২২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে রিলিফওয়েবের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।   

আপনার মন্তব্য

আলোচিত