নিউজ ডেস্ক

০৩ মার্চ, ২০১৫ ০২:২৮

হাসিনাকে মোদির চিঠি: বাংলাদেশে আসতে চাই

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে খুব শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

সোমবার (২ মার্চ) একদিনের ঢাকা সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে চিঠিটি হস্তান্তর করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি আগ্রহের সঙ্গে ঢাকা সফরে আসার জন্য অপেক্ষা করছেন। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান নরেন্দ্র মোদি।

এদিকে, সোমবার সকালে ঢাকা সফরে এসে সারাদিনই ব্যস্ত সময় কাটান ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। সকালে ঢাকা পৌঁছেই তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে প্রথমে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, ভারতের বিজেপি সরকার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বিদ্যমান সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করতে চায়। স্থলসীমান্ত চুক্তি, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তিসহ বাংলাদেশের সঙ্গে ঝুলে থাকা সমস্যাগুলোরও দ্রুত সমাধান করবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার।

বৈঠক থেকে বেরিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর সাংবাদিকদের বলেন, 'সফল ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের কাছ থেকে আরও সহযোগিতা চায় ভারত।'

প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, বৈঠকে দু'দেশের দ্বিপক্ষীয়, উপ-আঞ্চলিক, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় সব বিষয়েই দু'পক্ষ একমত হয়েছে এবং এতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আলোচনায় স্থলসীমান্ত চুক্তি, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়সহ দু'দেশের সম্পর্কের ভেতরে যত বিষয় আছে সবই এসেছে। বিশেষ করে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ট্রানজিট ও জলবিদ্যুৎ সহযোগিতার বিষয় সুনির্দিষ্টভাবে আলোচিত হয়েছে।

বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে এই উপ-আঞ্চলিক জ্বালানি এবং যোগাযোগ বলয় তৈরি হচ্ছে। বাণিজ্য ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'তিস্তার চুক্তির ব্যাপারে উদ্বেগ হচ্ছে- তিস্তার পানিপ্রবাহ সর্বনিম্ন স্তরে নেমে আসা, তিস্তাচুক্তির খসড়া তৈরি হওয়ার পর কারিগরি প্রশ্ন ওঠা এবং চুক্তির বিষয়টি দীর্ঘ সময় থেকে ঝুলে থাকা।'

উদ্বেগের কথা ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবকে জানিয়েছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বৈঠকে তিস্তাচুক্তির বিষয়টি অন্য বিষয়গুলোর সঙ্গে এসেছে।' ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, তিস্তার পানিবণ্টন সমস্যার সমাধানে তারা আন্তরিক।

আগামী ২৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় থাকছেন- এমন কথা শোনা যাচ্ছে জানালে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, 'সাংবাদিকরা যেমন শুনছেন, তিনিও তেমনি শুনেছেন। তার কাছে এর চেয়ে বেশি তথ্য এ মুহূর্তে নেই।'

স্থলসীমান্ত চুক্তির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে ভারতের সংসদে বিল পাস হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এ বিষয়টি দ্রুতই সমাধান হবে, এটা পরিষ্কার।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের বাংলাদেশের কাছ থেকে আরও সহযোগিতা চাওয়ার বিষয়ে শহীদুল হক বলেন, 'বাংলাদেশও ভারতের কাছ থেকে আরও সহযোগিতা চায় এবং বন্ধন আরও সুদৃঢ় করতে সহযোগিতা দিতেও প্রস্তুত।'

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত