সিলেটটুডে ডেস্ক

২৬ এপ্রিল, ২০১৬ ২১:২২

বাধা দেওয়ায় জুলহাজের মায়ের দিকে চেয়ার ছুঁড়ে মারে ঘাতকেরা

রাজধানীর কলাবাগানের বাসায় ঢুকে জুলহাজ মান্নানকে চাপাতি দিয়ে একের পর এক কোপ দিচ্ছিল ঘাতকেরা। আর্তনাদ শুনে খাট থেকে নেমে আসেন ৯০ বছর বয়সী মা সখিনা খাতুন। নামতে গিয়ে পড়েও যান তিনি। কিন্তু তারপরও ছেলেকে বাঁচাতে বসার ঘরে ছুটে আসেন। ঘাতকদের কাছে জানতে চান, ‘আমাকে বল, আমার ছেলের অপরাধটা কী?’

মায়ের এমন প্রশ্নের জবাবে ঘাতকদের একজন তাঁর দিকে চেয়ার ছুড়ে মারে। চেয়ারের আঘাতে পড়ে যান তিনি। পায়ে আঘাত পান। এর পরের কোনো কিছুই আর মনে করতে পারছেন না তিনি।

অবসরপ্রাপ্ত এই শিক্ষিকার এখন একটাই জিজ্ঞাস্য—ছেলে আছে কোথায়? ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শুনলে সেই শোক সহ্য করতে পারবেন কি না, সে কারণে পরিবার থেকে বলা হয়েছে, ছেলেকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে এসব কথা জানালেন সোমবার কলাবাগানে খুন হওয়া জুলহাজ মান্নানের চাচা আমিনুল হোসেন। ভাতিজা জুলহাজের মরদেহ নিতে মর্গে গিয়েছিলেন তিনি। ময়নাতদন্তের পর লাশ নিয়ে প্রথমে কলাবাগানের বাসায় যান।

আমিনুল বলেন, জুলহাজের মায়ের মানসিক অবস্থা ভালো নয়। বয়সও অনেক। সবকিছু মনেও রাখতে পারছেন না তিনি। তাঁকে জুলহাজের বড় ভাই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তা মিনহাজ মান্নানের গুলশানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁদের বাড়ি চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায়। সখিনা খাতুন চাঁদপুরে ও ঢাকায় রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। জুলহাসের বোন রুমানা যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। তিনি দেশে ফিরছেন।

জুলহাজের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান বলেন, আজ বাদ জোহর কলাবাগানে তাঁদের বাসাসংলগ্ন তেঁতুলতলা মাঠে জানাজা হয়। এরপর বাদ আছর বনানী কবরস্থানে জুলহাজের মরদেহ দাফন করা হবে। তিনি বলেন, জুলহাজকে কেউ হুমকি দিয়েছে—এমন তথ্য তাঁর বা পরিবারের জানা নেই।

একই ঘটনায় নিহত মাহবুব তনয়ের লাশও ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা আছে। এখনো কোনো স্বজন সেখানে যাননি। তবে শেওড়াপাড়ায় তনয়ের বাসার আশপাশের প্রতিবেশী কয়েকজন ছোট ভাই মর্গে এসেছেন। তাঁরা বলেন, তনয় ভাই এলাকায় সেভাবে কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না। তাঁরা মর্গে লাশ আছে শুনে এসেছেন। তনয় ভাই ঢাকায় মা-বোনের সঙ্গে শেওড়াপাড়ার বাসায় থাকতেন।

সূত্র : প্রথম আলো

আপনার মন্তব্য

আলোচিত