সিলেটটুডে প্রতিবেদন

০৭ মার্চ, ২০১৫ ২৩:৩৯

অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ড : পথচারীর বেশে ছিলো ঘাতকদের সহযোগীরাই

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিজিৎ হত্যার ঘটনা তদন্তে এমনই তথ্য পেয়েছে।

প্রখ্যাত বিজ্ঞান লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ড. অভিজিৎ রায়কে খুনের সময় পথচারির বেশে  আশেপাশে একাধিক ঘাতক অবস্থান করছিল। এ সংখ্যা ১৫/২০ জন হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে , তারা আগে থেকেই অভজিৎ রায় ও বন্যা আহমেদকে অনুসরন করছিল । হত্যার সময় আশেপাশে পথচারীর ছদ্মবেশে ঘাতকদের সহযোগীরাই অবস্থান করছিল। অভিজিৎ ও তার স্ত্রীর ওপর হামলা চালানোর সময় এরাই ঘাতকদের নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। বাংলা একাডেমি ও সোহারাওয়ার্দী উদ্যানে একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে ঘটনাস্থল পর্যন্ত ঘাতকদের প্রায় অর্ধশত সহযোগী বিভিন্নভাবে এই দম্পতির উপর নজর রাখছিল ।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিজিৎ হত্যার ঘটনা তদন্তে এমনই তথ্য পেয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের সময় আশেপাশে বেশক’জন সহযোগী পথচারী বেশে অবস্থান করছিল। তারা একুশে বইমেলা এবং বের হওয়ার স্থান থেকে অভিজিৎ রায় ও তার স্ত্রীকে অনুসরণ করে আসছিল। অভিজিতের ওপর হামলার সময় যেসব লোক পথচারী বেশে ঘিরে ধরেছিল তারা আসলে ঘাতকদের সহযোগী। এদের কাছেই আহত অভিজিতের স্ত্রী সহায়তা চান। এসময় ছদ্মবেশী ওই পথচারীরাই ঘাতকদের পালাতে সহায়তা করে। এরপরই সেখানে আশেপাশে থেকে গণমাধ্যমকর্মী, চায়ের দোকানদার ও পুলিশ ছুটে আসে।

এদিকে, হত্যার ঘটনায় মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের কাছে অভিজিৎ রায়ের বাবা অজয় রায় বক্তব্য দিয়েছেন। শনিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে তিনি এফবিআইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। অজয় রায় অভিযোগ করেন, মুক্তমনা চর্চা করা তার ছেলেকে উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীই হত্যা করেছে। মাঝে মধ্যেই তার ছেলেকে জঙ্গিগোষ্ঠী হত্যার হুমকি দিতো। এসব হুমকি উপেক্ষা করে তার ছেলে দেশে আসার পর চক্রটি পিছু নেয়। তারা পরিকল্পিতভাবে তার ছেলেকে হত্যা করেছে। ছেলের হত্যার বিচার চাওয়ায় ওই চক্রটি এখন তার মোবাইল ফোনেও প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, দেশের গোয়েন্দা সংস্থা জানে যে কারা তার ছেলেকে হত্যা করেছে। যারা তার ছেলেকে বিভিন্ন সময়ে হত্যার হুমকি দিয়েছে, তারাই এ হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

অন্যদিকে, এ হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহ গ্রেপ্তার হিযবুত তাহরীর নেতা শফিউর রহমান ফারাবীকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। শনিবার তার রিমান্ডের তৃতীয় দিন অতিবাহিত হয়।

এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, ‘ফারাবীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ফারাবী সরাসরি হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি। তবে সে অভিজিৎকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল সেটি স্বীকার করেছে। এমনকি অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের পর বিষয়টি নিয়ে সে ফেসবুকে মন্তব্য করেছিল- সেটিও স্বীকার করেছে।’

অন্যদিকে অভিজিৎ রায় হত্যা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ‘পরিকল্পনা মাফিক খুনিরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘাতকরা বেশ কয়েকজন ছিল। এ কারণে সেখানে যে খুন হবে আশেপাশের লোকজন বুঝতে পারেনি।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত