১২ জুলাই, ২০১৬ ০০:৩৬
গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর নড়েচড়ে বসেছে সরকার। জঙ্গি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জড়িত থাকার নতুন নতুন তথ্য আসার প্রেক্ষাপটে দেশের সবগুলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠকে ডেকেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আগামী ১৭ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সভাপতিত্ব করবেন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও ওই সভায় উপস্থিত থাকবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার (১১ জুলাই) বিকালে সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তরে এসে তাকে সভার বিষয়ে অবহিত করেন। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ছাড়াও কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
সভার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু না জানালেও শিক্ষামন্ত্রী সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় মিলেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা সফল করব।
বর্তমানে দেশে ৯৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারি অনুমোদন রয়েছে। এরমধ্যে ৮০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
আহুত এ বৈঠকে দেশের সবগুলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান, উপাচার্য ছাড়াও ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধিদের রাখা হবে। এছাড়াও স্কলাসটিকাসহ কয়েকটি ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদেরও সভায় ডাকা হবে বলে জানা গেছে।
গত ১ জুলাই গুলশানের জঙ্গি হামলার পর সশস্ত্র বাহিনীর অভিযানে নিহত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের ছবি প্রকাশ করে আইএস। ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পুলিশের গুলিতে এক যুবক নিহত হন। এই ছয়জনের মধ্যে চারজনই বিভিন্ন ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে লেখাপড়া করেছেন। তাদের দুইজন ঢাকার নামি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলেন, একজন ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের। ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলায় যে আটজনের সাজার আদেশ হয়েছে, তাদের মধ্যে সাতজনই নর্থ সাউথের শিক্ষার্থী ছিলেন।
গত বছর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত দল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে নিষিদ্ধ সংগঠনর হিজবুত তাহরীরের বইপত্র পায়। জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারও করা হয় বলে গণমাধ্যমের খবর।
গুলশান ও শোলাকিয়ার ঘটনার পর কোনো তরুণ বাড়ি পালিয়ে জঙ্গি দলে ভিড়েছে কি না- তা জানতে পরিবারের কাছে তথ্য চেয়েছে সরকার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও বলা হয়েছে, কোনো শিক্ষার্থী টানা দশ দিন অনুপস্থিত থাকলেই সে তথ্য সরকারকে জানাতে হবে।
আপনার মন্তব্য