সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ জুলাই, ২০১৮ ১৫:৩৭

‘জাতীয় নির্বাচনে জনসমর্থনে এগিয়ে থাকবে আ.লীগ’

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের সময় জনসমর্থনে এগিয়ে থাকবে। এমনটাই মনে করছে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিএমআই রিসার্চ।

শুক্রবার (১৩ জুলাই) বিএমআই রিসার্চের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত ফেব্রুয়ারিতে দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজায় কারাগারে যাওয়ার পর দলটির শক্তি অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।

ফলে গবেষণা সংস্থার বিশ্লেষকদের ধারণা, ‘দুর্বল নেতৃত্বের’ বিএনপি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সামনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারবে না।

দুইশর বেশি দেশে রাজনৈতিক ঝুঁকি নিরূপণে কাজ করা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বিএনপি নেতাকর্মীরা গত কয়েক মাস ধরে অনশন, মানববন্ধনের মত যেসব রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে আসছেন, তাতে চলতি বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ওপর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, “ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে এবং দেশে বহু নেতা গ্রেপ্তার থাকায় বিএনপির নেতৃত্বে ‘শক্তিশালী’ নেতার সঙ্কট তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের অবস্থা এর উল্টো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সাল থেকে দলটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন, কয়েক মেয়াদে তিনি সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন।”

বিএমআই রিসার্চ বলছে, রাজনৈতিক বাস্তবতার পাশাপাশি ভোটের বছরের বাজেটে গ্রামের কৃষিজীবী মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য যেসব সুবিধা দেওয়া হয়েছে, তার ফলও আওয়ামী লীগ নির্বাচনে পাবে।

২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ভর্তুকি, কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন খাতে বরাদ্দের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় যথাক্রমে ২৭.৯, ২৪.৮ ও ৮.৯ শতাংশ বাড়িয়েছে। এটা ভোটারদের সমর্থন আদায়ে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে গবেষণা সংস্থাটি।

এদিকে গত মে ও জুন মাসে খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বড় জয়ের মধ্যেও বিএনপির সমর্থন কমার আভাস দেখতে পাচ্ছে আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি।

নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপির নাশকতার আশঙ্কাও নাকচ করতে না পেরে সংস্থাটি বলছে, ২০১৪ সালের মত এবারও বিএনপির নির্বাচন বর্জনের সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।

যার কারণ হিসেবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোট করার দাবি এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার বিএনপির ইঙ্গিত সেই সাথে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্দলীয় সরকারের দাবি বরাবরই নাকচ করার বিষয়টিই আমলে নিয়েছে বিএমআই।

বিএমআই রিসার্চ তাদের স্বল্পমেয়াদী রাজনৈতিক সূচকে বাংলাদেশের স্কোর এবার একশর ভেতরে ৫৮.১ দিয়েছে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি আসনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। সেই নির্বাচনটি বর্জন করেছিল বিএনপি। ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে ওই নির্বাচনে জয় পেয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।

নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের টানা তিন মাসের অবরোধ-হরতালে শতাধিক মানুষের প্রাণ যায়। ওই রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে গ্রেপ্তার হয় সাত হাজারের বেশি নেতাকর্মী।

এইসব কিছু বিবেচনা করেই এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিএমআই রিসার্চ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত