সিলেটটুডে ডেস্ক

২২ অক্টোবর, ২০১৮ ২২:২৫

মইনুল হোসেন গ্রেপ্তার

মানহানির মামলায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

সোমবার রাতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা আ স ম রবের রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তাকে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেয়া হচ্ছে।

রংপুরের একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম।

গত ১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে একাত্তর টেলিভিশনের নিয়মিত আয়োজন ‘একাত্তর জার্নাল’-এ রাজনৈতিক সংবাদের বিশ্লেষণে লেখক ও সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে 'চরিত্রহীন' বলে গাল দেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। এরপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়াসহ সব জায়গায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন মইনুল হোসেন।

দেশের অর্ধশতাধিক সম্পাদক এবং সিনিয়র সাংবাদিকসহ পেশাজীবীরা মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেন।

অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন উপস্থাপিকা মিথিলা ফারজানা। এতে অতিথি ছিলেন মাসুদা ভাট্টি ও সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত। আলোচনায় স্টুডিওর বাইরে থেকে যুক্ত হন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।

টকশোতে কটূক্তির অভিযোগে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন দৈনিক আমাদের অর্থনীতির নির্বাহী সম্পাদক মাসুদা ভাট্টি। গত রোববার দুপুরে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. আসাদুজ্জামান নূরের আদালতে তিনি এ মামলা করেন।

এছাড়াও জামালপুর, ভোলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও রংপুরে ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করে নারী সাংবাদিক ও নারী নেত্রিরা। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

এসব মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর মইনুল কয়েকটি মামলায় হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন নিলেও রংপুরেরটিতে জামিন ছিল না বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।

মানহানির অভিযোগে সোমবার বিকালে রংপুরে মামলা করেন স্থানীয় ছাত্রলীগ নেত্রী মিলি মায়া। অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত মামলাটি গ্রহণ করে মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।

এদিকে সোমবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনেও সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে মইনুলের কটূক্তির বিষয়টি আলোচনায় এলে শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেছিলেন, আপনারা প্রতিবাদ করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যা করার করবে। আপনারা মামলা করেন, আমরা যা করার করব।

জরুরি অবস্থার সময় মইনুল যখন সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন, তখন দুই প্রধান নেত্রী শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়াসহ অনেক রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ রয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ছেলে মইনুলের ভাই আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বর্তমান সরকারে পানিসম্পদমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন। তবে তাদের দুই ভাইয়ের বৈরী সম্পর্কের বিষয়টি আলোচিত।

মইনুল ইংরেজি দৈনিক নিউ নেশনের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ও প্রকাশক।

একাত্তরে মইনুল পাকিস্তানি বাহিনীর ‘দালালি’ করেছেন বলে সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাত্তরে শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের হত্যাকাণ্ডের জন্যও মইনুলকে দায়ী করেন তিনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের উদ্যোগে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে সক্রিয় রয়েছেন ব্যরিস্টার মইনুল হোসেন।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত