সিলেটটুডে ডেস্ক

১৪ নভেম্বর, ২০১৮ ১৩:২২

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন স্থগিত করার আহ্বান জাতিসংঘের

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন স্থগিত করতে এবার বাংলাদেশকে আহ্বান জানালেন খোদ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তরের প্রধান মিশেল ব্ল্যাশেলেট। বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর প্রাক্কালে মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জেনেভা থেকে এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।

এর আগে গত সোমবার জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরার মতো অনুকূল পরিবেশ এখনো সৃষ্টি হয়নি। গত সপ্তাহে মিয়ানমারে মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের স্পেশাল সাপোর্টিয়ার (বিশেষ দূত) ইয়াংহি লিও একই কারণ দেখিয়ে প্রত্যাবাসন উদ্যোগ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রত্যাবাসন উদ্যোগ স্থগিত করার আহ্বানটি এলো জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তরের প্রধানের কাছ থেকে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, প্রত্যাবাসন উদ্যোগের প্রতি চীন ও ভারতের সমর্থন রয়েছে। তারা চায় দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু হোক। বাংলাদেশও চাচ্ছে প্রত্যাবাসন শুরু করতে। ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী গতকাল নয়াদিল্লীতে ৬০ জনেরও বেশি বিদেশি কূটনীতিককে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনের জন্য মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্ল্যাশেলেট বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছেন, এই প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের জীবন ও স্বাধীনতা চরম ঝুঁকিতে পড়বে। প্রত্যাবাসন উদ্যোগটিই আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে।

মিয়ানমারে নাজুক পরিস্থিতির তথ্য তুলে ধরে মিশেল ব্ল্যাশেলেট বলেন, তাঁর দপ্তর এখনো রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের হত্যা, গুম ও গ্রেপ্তারের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ওপর চলাফেরা ও অন্যান্য বিধিনিষেধ অব্যাহত আছে। এক লাখ ৩০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বাস্তুচ্যুত শিবিরে আছে। এ ছাড়া শূন্য রেখায় প্রায় পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা আছে। তাদের স্বাধীনতা ও চলাফেরার ওপর ব্যাপক বিধিনিষেধ আছে।

আগামীকাল (১৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে। প্রথম ধাপে দুই হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন ১৫০ জন করে ১৫ দিনে এসব রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হবে।

গতবছর অগাস্টে রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। তাদের কক্সবাজারের কয়েকটি কেন্দ্রে আশ্রয় দিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তায় জরুরি মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে বাংলাদেশ সরকার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত