সিলেটটুডে ডেস্ক

১২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২১:৪০

রিকশাচালককে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল, আ.লীগ নেত্রী বহিষ্কার

ঢাকার রাস্তায় একজন রিকশাচালককে এক নারী থাপ্পড় দিচ্ছেন এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছেন, এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত নারীকে বহিষ্কার করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ৭ নম্বর (রূপনগর থানার আংশিক ও মিরপুর থানার আংশিক) ওয়ার্ড।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. মকবুল হোসেন তালুকদার বলেন, রিকশাচালককে মারধর করার অপরাধে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদক সুইটি আক্তারকে মঙ্গলবার বহিষ্কার করা হয়েছে। সুইটি মুরব্বিদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন, এটি দেখার পর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ তাৎক্ষণিক সভায় বসে তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে একজন কর্মীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয় কি না, এ প্রশ্নের জবাবে মো. মকবুল হোসেন বলছেন, ‘ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার কারণে খারাপ প্রভাব পড়ছে। আমাদের দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে এমপি সাব (আসলামুল হক) আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, আমরা সেভাবে কাজ করেছি।’

বহিষ্কারাদেশে উত্তর আওয়ামী লীগ লিখেছে, ‘গত কিছুদিন যাবৎ দলীয় কর্মকাণ্ডে আপনার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য দলের সুনাম বিনষ্ট হয়েছে। এ বিষয়ে আপনাকে বারবার সতর্ক করার পরও আপনার আচরণ সংশোধন হয়নি বরং আপনার উচ্ছৃঙ্খল আচরণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় দলের কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ থেকে আপনাকে ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদক ও প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হলো।’

দল আপনাকে বহিষ্কার করে আপনার সঙ্গে অন্যায় করল কি না, এ প্রশ্নের জবাবে সুইটি আক্তার  বলছেন, ‘না আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়নি। আমার শিক্ষা নেওয়ার দরকার ছিল। শুধু এটি না, আমার দল যদি এর চেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়, আমি মাথা পেতে নেব। দল তো কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে পারত? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার নেতারা যেটি ভালো মনে করেছেন, সেটি তাঁরা করেছেন। আমি তো একটি কথা বলেছি, আমার এটি (বহিষ্কার) নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই।’

সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে সুইটি আক্তার বলেন, ‘আমি কিছুই করিনি। সাধারণ একটি ঘটনা। এমনি এমনি কি কেউ উত্তেজিত হয়? নিশ্চয় কোনো কারণ ছিল বা হয়ে গেছে। তারপরও আমি সরি (দুঃখিত)। এ ছাড়া আমি কী বলব? আমি কী করতে পারি?’

মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায় সুইটি আক্তার একজন রিকশাচালকের ওপর চড়াও হয়েছেন। তিনি নিজেই ওই রিকশার যাত্রী ছিলেন। রিকশাচালককে জোরে চালাতে বলেন। রিকশাচালক জানান, এর চেয়ে বেশি জোরে চালাতে পারবেন না। এতেই বাধে বিপত্তি। ক্ষিপ্ত নারী চড়াও হন চালকের ওপর। সবার সামনে রিকশা থেকে নেমে চালককে থাপ্পড় মারেন। আবার রিকশায় উঠে হাতের ব্যাগ দিয়ে রিকশাচালককে মারতে উদ্যত হন। গালিগালাজও করেন। এ সময় আশপাশে থাকা এলাকাবাসী এগিয়ে এসে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে তাদের দিকেও তেড়ে যান সুইটি। পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত