সিলেটটুডে ডেস্ক

০৬ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৭:৩৮

চোখের জলে সৈয়দ আশরাফকে শেষ শ্রদ্ধা

কেবল এমপি নয় বরং আওয়ামী লীগ সরকারের নতুন মন্ত্রীপরিষদের কোন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে যে সংসদে আসার কথা সৈয়দ আশরাফের, সেই সংসদ ভবন আঙ্গিনায় ঠিকই আসলেন সৈয়দ আশরাফ, কিন্তু মন্ত্রী বা সংসদ সদস্য হয়ে নয় আসলেন কফিন বন্ধী হয়ে।

রোববার (৬ জানুয়ারি) সকালে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মরদেহ যখন পৌঁছায় তখন তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে জড়ো হন সহকর্মীরা। দুঃসময়ের কাণ্ডারি বর্ষীয়ান এ নেতাকে অশ্রু চোখে বিদায় জানান সকলে।

শনিবার সন্ধ্যায় সৈয়দ আশরাফের মরদেহ দেশে নিয়ে আনার পর রোববার সকাল ১০টার দিকে নেওয়া হয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। সেখানে জাতীয় ও দলীয় পতাকায় মোড়া কফিনে ফুল দিয়ে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসময় আওয়ামী লীগের হাজারো নেতাকর্মী আশরাফের জানাজায় অংশ নিয়ে স্মরণ করেন তাদের ‘দুঃসময়ের কাণ্ডারিকে’। সততা, নির্লোভ মানসিকতা আর রাজনৈতিক বিচক্ষণতায় নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া আশরাফ শেষযাত্রায় শ্রদ্ধা পেয়েছেন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কাছ থেকেও। শেষ বিদায়ের আগে একাত্তরের রণাঙ্গনে মুজিব বাহিনীর এই যোদ্ধার প্রতি ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয় রাষ্ট্রীয় সম্মান।

সকলের শ্রদ্ধা জানানো শেষে তাঁর জানানা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার পর হেলিকপ্টারে করে সৈয়দ আশরাফের মরদেহ নেওয়া হয় তাঁর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। সেখানে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে বেলা সোয়া একটায় আরো একটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রিয় এ নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সকাল থেকেই মানুষের ঢল নামে। মাঠ ছাড়িয়ে পাশের রাস্তা, বাড়ির ছাদ ও সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে জানাজায় অংশ নেন মানুষ।

জানাজার আগে সৈয়দ আশরাফের সম্মানে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী ও পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদের নেতৃত্বে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। জানাজায় অংশ নেন কিশোরগঞ্জের ১৩ উপজেলাসহ আশপাশের উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। সেখানে চোখের জলে তাঁকে শেষ বিদায় জানান লাখো মানুষ। এর পর তাঁকে হেলিকপ্টারে করে আবার ঢাকায় এনে বাদ আছর রাজধানীর বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে বলে জানা গেছে।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফ ১৯৯৬ সাল থেকে কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর ও হোসেনপুর উপজেলা) আসনে টানা পাঁচবার নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হন।

গত বছরের জুলাই মাসে ফুসফুসে ক্যানসারের কারণে তাঁকে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তিনি বিজয়ী হন। কিন্তু সাংসদ হিসেবে শপথের আগেই গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে মারা যান সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৬৭ বছর।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত