সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ আগস্ট, ২০১৫ ২৩:৫৫

৫৭ ধারা বাতিলের দাবি নাকচ করে দিলেন তথ্যমন্ত্রী

সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের গ্রেপ্তারের ঘটনাকে দুঃখজনক বলেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। একই সঙ্গে তথ্য-প্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারা বাতিলের দাবিকেও নাকচ করে দিয়েছেন তিনি।

তথ্য প্রযুক্তি আইনের এ ধারায় সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে গ্রেপ্তার করার পর এটি নিয়ে নতুন করে আবার বিতর্ক শুরু হয়। ধারাটি বাতিলের দাবি সামনে অাসার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ মন্তব্য করলেন।

হাসানুল হক ইনু বলেন, প্রবীর সিকদারকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। আমার ঘনিষ্ঠজন। তিনি যখন আরেকবার বিপদে পড়েছিলেন, আমার ক্ষুদ্র সামর্থ্য অনুসারে পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। প্রবীর শিকদারের গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা দুঃখজনক বলে আমি মনে করি।

তবে ৫৭ ধারা বাতিলের কোনো ‘কারণ ঘটেনি’ মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ফেইসবুকে ‘সমালোচনা করার জন্য বা তথ্য দেওয়ার জন্য’ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

হাসানুল হক ইনু বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার সমালোচনা যুক্তিযুক্ত না। বাংলাদেশের সংবিধান ও আইনের সঙ্গে এটি সাংঘর্ষিক অবস্থায় নেই। যারা সমালোচনা করেন, তারা আমাদের অপরাধ দণ্ড আইন ভালো করে পড়ে দেখেননি। সেই আইনে ১০০ বছর ধরে অজামিনযোগ্য বহু আইন আছে।

নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে সাংবাদিক প্রবীর সিকদার সম্প্রতি ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন। ‘আমার জীবন শঙ্কা তথা মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী থাকবেন’ শিরোনামের ওই স্ট্যাটাসে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নাম আসায় গত রোববার প্রবীরের বিরুদ্ধে ফরিদপুরে মামলা করেন এক আইনজীবী।

তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় করা ওই মামলায় ফেইসবুকে লিখে মন্ত্রীর ‘ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ’ করার অভিযোগ আনা হয়। পুলিশ প্রবীর সিকদারকে গ্রেপ্তার করার পর তাকে তিন দিনের রিমান্ডেও পাঠিয়েছে আদালত।

এর প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে গণজাগরণ মঞ্চের বিক্ষোভ মিছিল থেকে প্রবীর সিকদারের মুক্তি দাবির পাশাপাশি ৫৭ ধারা বাতিল করার দাবি জানানো হয়।

মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার ওই ধারাকে সংবিধানে দেওয়া মত প্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও অভিযোগ করেন।

তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে মামলার নিন্দা জানিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক)নির্বাহী পরিচালক সুলতানা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা তথ্য-প্রযুক্তি আইনের অপব্যবহারের শঙ্কা বারবার প্রকাশ করেছি। এ ঘটনা আবারও আমাদের শংকাকে প্রমাণ করে।’

৫৭ ধারায় বলা হয়েছে- ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কোনো ব্যক্তির তথ্য যদি নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ করে, এতে যদি কারও মানহানি ঘটে, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, তা হবে অপরাধ। এর শাস্তি অনধিক ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং অনধিক ১ কোটি টাকা জরিমানা।

২০০৬ সালে হওয়া এ আইনটি ২০০৯ ও ২০১৩ সালে দুই দফা সংশোধন করা হয়। সর্বশেষ সংশোধনে সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর থেকে ১৪ বছর কারাদণ্ড করা হয়। আর ৫৭ ধারার অপরাধকে করা হয় অজামিনযাগ্য।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত