সিলেটটুডে ডেস্ক

০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ২১:২৫

প্রেসে ছাপানো হবে না এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন

কম্পিউটারে সফটওয়্যারের মাধ্যমে সব পরীক্ষার্থীর জন্য আলাদা সেটের প্রশ্নপত্রে অনুষ্ঠিত হবে এবারের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা। তাই এবারের প্রশ্ন প্রেসে ছাপানো হবে না। প্রশ্নফাঁস এড়াতে এবার এই পদক্ষেপের বাস্তবায়ন করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কম্পিউটারে প্রশ্ন প্রিন্ট করায় হাতে গোনা দায়িত্বশীল কয়েকজন ছাড়া অন্যদের সংশ্লিষ্টতা থাকবে না। আগামী ৪ অক্টোবর এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রেসে ছাপানোর বদলে কম্পিউটারে বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র তৈরি ও প্রিন্ট দেয়ার বিষয়টি এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় এবার প্রথম। তবে ইতোমধ্যে ডেন্টাল, মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল ও ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির ভর্তি পরীক্ষায় এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে।

তারা জানান, প্রেসে প্রশ্নপত্র ছাপা হলে বাইরের কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি প্রশ্নপত্র ছাপা, বাঁধাই ও সেলাইয়ের সাথে সম্পৃক্ত থাকেন। সর্বোচ্চ সতর্কতা নিলেও তাদের মাধ্যমে প্রশ্নফাঁস হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই প্রেসের বদলে কম্পিউটারে প্রশ্ন ছাপানোরে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

জানা গেছে, নতুন পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটির হাতেগোনা চার-পাঁচজন ব্যক্তি প্রশ্ন তৈরি ও ছাপার সময় উপস্থিত থাকবেন। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর প্রশ্ন হবে ভিন্ন। অর্থাৎ প্রশ্নের আলাদা সেটে পরীক্ষা নেয়া হবে প্রত্যেকের। ১০০টি প্রশ্নের সবগুলোই প্রত্যেক প্রশ্নপত্রে থাকবে। তবে একই প্রশ্ন একই জায়গায় থাকবে না। তাই কোন পরীক্ষার্থীর প্রশ্নপত্রের কোন প্রশ্ন কত নম্বরে আছে তা বোঝা যাবে না। এরফলে প্রশ্নফাঁস বা অসদুপায় অবলম্বনের সুযোগ প্রায় থাকবে না।

এর আগের পরীক্ষাগুলোতে চার সেট প্রশ্ন প্রণয়ন করা হতো। চার সেট প্রশ্ন ভিন্ন হলেও যেকোনো একটি সেটের প্রশ্ন ও উত্তর একই হতো। কিন্তু এবার যত সংখ্যক পরীক্ষার্থী তত সেট প্রশ্ন ছাপা হবে। ১০০টি প্রশ্ন একই থাকলেও এক পরীক্ষার্থীর ১ নম্বর প্রশ্ন অন্য পরীক্ষার্থীর ৯৯ নম্বরে থাকতে পারে। বিশেষ ধরনের সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রশ্ন প্রণয়ন হবে।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রেসে প্রশ্ন না ছাপানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরীক্ষামূলক প্রশ্নপত্র প্রণয়নে দেখা গেছে, অধিকতর স্বচ্ছতা ও গোপনীয়তা রক্ষা করে অল্প সময়ে প্রশ্নপত্র ছাপা যাবে। প্রশ্নপত্রও হবে ভিন্ন ভিন্ন। তবে কোনো জটিলতা দেখা দিলে প্রেসে প্রশ্ন ছাপানোর বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আগামী ৪ অক্টোবর দেশের ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নে পদার্থবিদ্যায় ২০, রসায়নে ২৫, জীববিজ্ঞানে ৩০, ইংরেজিতে ১৫ এবং বাংলাদেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাধারণ জ্ঞানে ১০ নম্বর থাকবে।

এ ভর্তি পরীক্ষার জন্য গত ২৭ আগস্ট দুপুর ১২টা থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়। আবেদন গ্রহণ করা হবে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদনকারীর সংখ্যা ৬১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে গ্রহণের জন্য ১ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে সব ধরনের মেডিকেল কোচিং সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ছড়ালে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত