দেবব্রত চৌধুরী লিটন

২২ এপ্রিল, ২০১৬ ১৯:২৮

কানাইঘাটে চেয়ারম্যান প্রার্থী স্কটিশ বংশোদ্ভূত লিও ফারগুসন নানকা

ডাকনাম নানকা। পুরো নাম জেমস লিও ফারগুসন। স্কটিশ বংশোদ্ভূত বাংলাদেশী নাগরিক তিনি। বসবাস করেন সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লোভাছড়া চা বাগানে। প্রায় ২০ বছর কানাইঘাট উপজেলার ২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। অংশ নিয়েছেন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে।

এবারও কানাইঘাট উপজেলার ২ নং লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন তিনি। শনিবার এই ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নানকার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, স্কটল্যান্ড থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ডনাল ফারগুসন সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা হিসেবে এসেছিলেন ভারতবর্ষে। ভারত উপমহাদেশে চা উৎপাদন যাদের হাত ধরে যাত্রা শুরু করেছিলো তাদের মধ্যে ডনাল ফারগুসন ছিলেন অন্যতম। তখনকার সেনা কর্মকর্তাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয় চা উৎপাদনের। ডনালের উপর দায়িত্ব পরে ব্যবস্থাপক হিসেবে দামাই চা বাগান তত্ত্বাবধানের। তারপর থেকে সেখানেই থেকে যান।



ডনাল তার একমাত্র ছেলে জেনস এ. ফারগুসনকে রেখে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর  ডনালকে সমাধিস্থ করা হয় লংলা চা বাগানে।

জেনস এ. ফারগুসন ব্রিটিশ সেনা হিসাবে অংশ নেন ২য় বিশ্বযুদ্ধে। জেনস এ. ফারগুসন তার চাকুরীর অবসরকালীন ভাতা দিয়ে ক্রয় করেন লোভাছড়া চা বাগান। তারপর থেকে এ বাগানেই থেকে যান জেনস। এখানেই তার মৃত্যু হয়।

জেনসের মৃত্যুর পর তার মেয়ে  জুন ফারগুসন লোভাছড়া বাগানের দায়িত্ব নেন। ৪ ছেলে ও ৪ মেয়ের জননী জুন ফারগুসনের বড় ছেলে জেমস লিও ফারগুসন নানকা।

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নানকা পড়াশুনা করতেন কুমিল্লায়, দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।  দেশ যখন সংকটাপন্ন তখন চলে আসেন সিলেটে। অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধে। ৪নং সেক্টরে যুদ্ধ করেন নানকা।

নানকার মালিকানাধীন লোভাছড়া চা বাগান দুটি ইউনিয়নের উপর অবস্থিত। লক্ষীপ্রসাদ ও লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়ন। এই দুই ইউনিয়নেরই চেয়ারম্যান ছিলেন নানকা। তিনিই সম্ভবত এ উপজেলার একমাত্র ব্যক্তি যিনি দুটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।

কানাইঘাটের ২নং লক্ষ্মী প্রসাদ পশ্চিম ইউপিতে ফের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। দলীয় প্রতীকে এবারের ইউপি নির্বাচনে নানকার প্রতীক নৌকা। ২৩ এপ্রিল (শনিবার) এ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

লিও ফারগুসন নানকা সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমি ১নং লক্ষীপাশা পূর্ব ইউনিয়নে টানা তিনবার ও ২ নং লক্ষীপাশা পশ্চিম ইউনিয়নে একবার চেয়ারম্যান ছিলাম। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। তাই এবারও জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত