নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ অক্টোবর, ২০১৭ ২৩:৪০

প্রজেরিয়া রোগী নূর ওসমানী হাসপাতালে, দায়িত্ব নিলেন সিভিল সার্জন

সিলেটের জকিগঞ্জের বিরল রোগে আক্রান্ত স্কুল ছাত্র আব্দুন নূরকে শনিবার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আব্দুন নূর উপজেলার বারঠাকুরী ইউপির তিনগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র। বিরল এ রোগের নাম প্রজেরিয়া বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বাংলাদেশের মধ্যে জকিগঞ্জেই প্রথম এ রোগ ধরা পড়েছে জানান চিকিৎসকরা।

আব্দুন নূরের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন সিলেটের সিভিল সার্জন হিমাংশু লাল রায়। হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মেডিসিন বিভাগের ৩৩ নম্বর ক্যাবিনে রয়েছে আব্দুন নূর।

প্রাথমিক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর নূরের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একে মাহবুবুল হক। এসময় উপস্থিত ছিলেন ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একে মাহবুবুল হক, সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হিমাংশু লাল রায়, মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক শিশির বসাক, জকিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুল আহাদ, স্বাস্থ্য সহকারী নুরুল হক, আব্দুন নূরের মা রাবিয়া বেগম, চাচা ফখরুল ইসলাম।

প্রজেরিয়া আক্রান্ত স্কুলছাত্র আব্দুন নূরের চিকিৎসা সরকারি খরচে হবে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।

গত ১২ অক্টোবর সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমে " দেশে প্রথম প্রজেরিয়া রোগীর সন্ধান মিললো জকিগঞ্জে" শিরোনামের এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরবাইরে আরও কিছু গণমাধ্যমে শিশুটিকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর সিলেটের সিভিল সার্জন তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন।

সিলেটটুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে ড্রেস পরে বসে আছে আব্দুন নূর নামের অস্বাভাবিক আকৃতির এক শিক্ষার্থী। এই শিক্ষার্থীর শরীরের চামড়াশুষ্ক ও ঝুলে পড়ছে, মাথা বড়, চুল ও চোখের উপরে ভ্রু নেই। মুখটাও ছোট, হাত ও আঙ্গুলের হাড়গুলো স্পষ্ট ভেসে উঠেছে, চলাফেরায় ধীরগতি। চেহারা দেখতে ৩০/৪০ বছরের বয়স্ক মানুষের মত লাগে। ছেলেটি কজাপুর গ্রামের প্রবাসী আব্দুল বাসিতের পুত্র।

উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক ডা. আব্দুল্লাহ আল মেহেদী বলেন, এ রোগটি প্রজেরিয়া (Progeria) নামের জিনঘটিত একটি বিরল রোগ। এ রোগে আক্রান্ত অল্প বয়সের শিশুগুলোকে দেখতে বয়স্ক মনে হয়। আমাদের দেশে এ ধরণের কোন রোগীর সন্ধান ইতোপূর্বে মেলেনি। জকিগঞ্জেই প্রথম এই ধরণের রোগের সন্ধান পাওয়া গেছে। এটি বংশানুক্রমিক বা উত্তরাধিকারসূত্রের কোন রোগ নয়।

শিশুর মা রাবিয়া বেগম জানান, এ রোগটি শিশুটির জন্মের। রোগটি থেকে রেহাই পেতে অনেক চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়েছি কিন্তু নিরাময় হয়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ রোগের কোন চিকিৎসা নেই। শিশুটি পুষ্টির অভাবে এখন শুকিয়ে যাচ্ছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত