সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

১১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০১:২০

হাওরের মানুষের দুঃখ দূর করতে কাজ করে যাচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সুনামগঞ্জ খুবই অবেহেলিত জায়গা। আমরা চেষ্টা করছি হাওরাঞ্চলের মানুষের দুঃখ দুর্দশা যাতে দূর হয়। হাওরাঞ্চলে যাতে মাছের চাষ ভাল হয়; সেই মাছ যাতে প্রক্রিয়াজাত করা যায় সেই ব্যবস্থার জন্য আমরা দৃষ্টি দিতে যাচ্ছি। হাওরাঞ্চলের ফসল আগাম বন্যায় নষ্ট হচ্ছে; তাই আমাদের মাছের চাষে গুরুত্ব দিতে হবে এবং ভাসমান সবজি চাষও আমরা শুরু করেছি। হাওরাঞ্চল কিভাবে আরো উন্নত করা আমরা সেটা দেখব। আমি গোপালগঞ্জের মেয়ে। হাওরাঞ্চলের সুনামগঞ্জ, আমার এলাকা গোপালগঞ্জ। সুনামগঞ্জের সাথে আমার মিল আছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,‘ বিএনপি দেশের মানুষকে বিদ্যুৎ দিয়েছিল ১৬০০ মেগাওয়াট; আমরা এখন বাংলাদেশের মানুষকে দিচ্ছি ১৬ হাজার ১৫০ মেগাওয়াট। দেশের ৮৩ মানুষ এখন বিদ্যুৎ পায়। প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে সোলার প্যানেল দিচ্ছি। আমরা প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে চাই। তাই দুর্গম, চরাঞ্চল ও হাওর এলাকায় সোলার প্যানেল মাধ্যমে বিদ্যুৎ দিচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,‘ গত বার বৃষ্টি-বন্যায় মানুষের ফসল নষ্ট হয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি হাওরের কেউ যেন কষ্ট না পায়। বিদেশ থেকে আমরা খাদ্য আমদানী করে সরবরাহ করছি। হাওরের মানুষের জন্য আমরা সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। মানুষের জীবনটা যেন সহজ হয়। মানুষ যেন সুখে থাকতে পারেন ও উন্নত জীবন পায়। ’

গণভবন থেকে ভিডিও কনফান্সেরিং-এর মাধ্যমে সুনামগঞ্জের শালায় ৪০০ কিলোওয়াট সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি। গতকাল রোববার বেলা ১১টা ৪৬ মিনিটে ৪০০ কিলোওয়াট সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম ও শাল্লার সোলার বিদ্যুতের উপকারভোগী হবিবপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সুবল চন্দ্র দাসের সাথে কথা বলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম. এ মান্নান, সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তা, সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সংসদ সদস্য অ্যাড. পীর ফজলুর রহমাস মিসবাহ, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক যুগ্ম সচিব মোখলেছুর রহমান সরকার, বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব এ.টি.এম মোস্তফা কামাল, পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান, পৌর মেয়র আয়ুব বখত জগলুল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে শাল্লার হাওরপাড়ের ৪ একর ভূমির উপর ‘দুর্গম হাওর এলাকায় নবায়নযোগ্য জ্বালানী নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন পাইলট প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই প্রকল্প থেকে ৪০০ জন গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ পাবেন। প্রকল্পে ২৩২২ টি সোলার প্যানেল ও ৫৪০ টি ব্যাটারী ব্যবহার করা হয়েছে। ৬ কিলোমিটার লাইনের মাধ্যমে প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ পাবে হবিবপুর ইউনিয়নের আগুয়াই, শ্বাসখাই বাজার, বিলপুর, সরসপুরসহ ১৬ টি পাড়ার ৪শ’ পরিবার। প্রত্যেক গ্রাহককে সংযোগের জন্য প্রাক্কলন ব্যয় ৭০৩ টাকা ও নিরাপত্তা জমা ৩৭৫ টাকা দিতে হবে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি রক্ষণাবেক্ষন ও পরিচালনা করবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত