কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

১৯ মে, ২০১৮ ১৭:২৮

কর গ্রহণের ব্যবস্থা না থাকায় স্ত্রী-সন্তানকে রেখেই ভারতে গেলেন এক যাত্রী

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনে ভ্রমণ কর গ্রহণের কোন ব্যবস্থা না থাকায় ও শুধুমাত্র শিশু সন্তানের কর না দেওয়ায় স্ত্রী-সন্তানকে রেখে ভারতে গেলেন এক যাত্রী।

শুক্রবার (১৮ মে) বিকালে চাতলাপুর চেকপোস্টে এ ঘটনাটি ঘটে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার ভারতে গমনকারী যাত্রীরা আকস্মিকভাবে চরম ভোগান্তির শিকার হন। শনিবার চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন ও ইমিগ্রেশন কেন্দ্র এলাকা ঘুরে এ চিত্র পাওয়া যায়।

শনিবার দুর্ভোগের শিকার ভারতীয় ভিসা নিয়ে ভ্রমণকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা লিপি পাল জানান, তিনিসহ স্বামী পিন্টু পাল ও ৪ বছর বয়সী শিশু সন্তান গোবিন্দ পাল ভারতীয় ভিসা গ্রহণ করেন। তারা এক অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে শুক্রবার বিকালে চাতলাপুর চেকপোস্ট দিয়ে ভারতের উত্তর ত্রিপুরার কৈলাশহরে যাচ্ছিলেন। কমলগঞ্জের শমশেরনগর শাখা সোনালী ব্যাংক থেকে স্বামী-স্ত্রীর ভ্রমণ কর পরিশোধ করে রসিদও গ্রহণ করেন। তবে শিশুটি ৪ বছরের থাকায় তাদের ধারনা ছিল এ শিশুর কর দিতে হবে না। তাই তারা তার কর পরিশোধ করেননি।

শুক্রবার বিকালে চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনে তাদের ভিসা চেকিং ও ইমিগ্রেশন কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভারতে প্রবেশের আগে চেক পয়েন্টে বিজিবির সদস্যরা পাসপোর্ট দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিপিবদ্ধ করেন। এ সময় শিশু সন্তানের ভ্রমণ করের জন্য তাকে যেতে আপত্তি জানায় বিজিবি সদস্যরা।

লিপি পাল আরো জানান, প্রয়োজনে দেশে ফিরার সময় ভ্রমণ কর পরিশোধ করবেন। এরপরও শিশু গোবিন্দ পালকে যেতে দেয়নি বিজিবি সদস্যরা। অবশেষে স্বামী পিন্টু পাল স্ত্রী ও সন্তানকে রেখে ভারতে যান।

লিপি পাল আরো জানান, পরে বাধ্য হয়ে তিনি চেকপোস্ট থেকে কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরে বাসায় ফিরে এসেছেন। রোববার(২০ মে) শিশু গোবিন্দের ভ্রমণ কর দিয়ে তিনি ভারতে যাবেন।

চাতলাপুর ইমিগ্রেশন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই জামাল হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ণরুপে নির্ভর করে শুল্ক বিভাগের উপর। বৈধ ভিসা আছে কিনা তা তদারকি করে তথ্য সংগ্রহ করে ইমিগ্রেশনের আইনানুগ কাজ করেন মাত্র।

তিনি আরো বলেন, মানবিক কারণে বিজিবি সদস্যরা শিশু গোবিন্দ পালকে ভ্রমণের সুযোগ দিতে পারত।

চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার এ দুর্ভোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশনে ভ্রমণ কর গ্রহণের বুথ না থাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

তিনি মনে করেন, বাবা ও মা'র ভ্রমণ কর পরিশোধ ছিল। পরে শিশু গোবিন্দ পালের ভ্রমণ কর দিয়ে রসিদ জমা দিতে পারতেন। এখানে মানবিক কারণে শুক্রবার বাবার সাথে মাকে নিয়ে শিশুটি ভ্রমণ করতে পারত। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার ব্যাংকের সহায়তায় ভ্রমণ কর গ্রহণ করার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণে শুল্ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত