মাধবপুর প্রতিনিধি

০৩ জুলাই, ২০১৮ ০১:০০

মাধবপুরে ৫টি চা বাগানে রোগের প্রকোপ, উৎপাদন ব্যাহত

হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার ৫টি চা বাগানে লিপ রাষ্ট ও থিপস রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এসব রোগের ফরে চা গাছের কালো হয়ে গেছে। প্রায় ২ মাস ধরে এ অবস্থা চলতে থাকায় চা বাগানগুলোতে উৎপাদনে ধস নেমেছে।

রোগ সাড়াতে দফায় দফায় বিভিন্ন বালাই নাশক ঔষধ প্রয়োগ করে কিছুতেই এ রোগ দমন করা যাচ্ছে না। চা বাগানে এমন রোগ দেখা দেওয়ায় শ্রমিক, কর্মকর্তা কর্মচারী ও মালিকপক্ষ হতাশ হয়ে পড়েছেন।

ভরা মৌসুমে রোগের প্রকোপের কারণে উৎপাদন নেমে এসেছে চার ভাগের এক ভাগ।

সুরমা চা বাগানের ব্যবস্থাপক আবুল কাশেম জানান, ২০১৬ সালে চা বাগানের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদন হয়েছিল। ২০১৭ সালেও আশানুরূপ উৎপাদন হওয়ায় চা শিল্পের প্রতি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ বৃদ্ধি পায়। চা বিক্রয় করে বাগানগুলো লাভবান হওয়ায় পতিত জায়গায় নতুন চা বাগান সৃজন করা হয়। এর পাশাপাশি চা কারখানার পরিধিও বাড়ানো হয়। ২০১৮ সালের শুরুতেই প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এতে আশা কার হচ্ছিল এবারও চা বাগানে বাম্পার ফলন হবে। কিন্তু বর্ষা মৌসুম আসতেই চা বাগানে বিপর্যয় দেখা দেয়। চা পাতা কালো হয়ে নতুন কোন কুঁড়ি গজায় না। প্রথমে বালাইনাশক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই সারা বাগানে এ রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। চা উৎপাদনের পুরো মৌসুমে এখন চার ভাগের এক ভাগ চা পাতাও উত্তোলন করা যাচ্ছে না। এতে করে চা শিল্পের বিনিয়োগকারীরা মারাত্মক লোকসানের মুখে পড়বে।

ন্যাশনাল টি কোম্পানীর জগদীশপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক বিদ্যুৎ কুমার রায় জানান, লিপ রাষ্ট ও থিপস নামে দুটি রোগে এ ধরনের অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। থিপস রোগটি পোকামাকড়ের পাঙ্গাল দ্বারা সমস্ত বাগানে ছড়িয়ে পড়েছে। চা গাছের পাতা কালো হয়ে যাওয়ার কারণে পাতা সূর্যের সাহায্যে খাদ্য সংগ্রহ করতে পারছে না। এ কারণে নতুন পাতা গজাচ্ছে না।

তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক এমদাদুর রহমান মিঠু জানান, উৎপাদনের ভরা মৌসুমে হঠাৎ করে বাগানে এ জাতীয় রোগ ছড়িয়ে পড়ায় পাতা সংগ্রহ করা যাচ্ছে না।

এতে করে বাগানগুলো লোকসানের মধ্যে পড়বে। নোয়াপাড়া চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক সোহাগ মাহমুদ জানান, তার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে অতি বৃষ্টি ও রোদ না থাকায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এটি ভাইরাস জনিত রোগের পাদুর্ভাব।

শ্রীমঙ্গল চা গবেষনা প্রতিষ্ঠানের বৈজ্ঞানিক তৌফিক আহমেদ জানান, কি কারণে বাগানগুলোতে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে এ নিয়ে গবেষণা চলছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত