জাহিদ উদ্দিন, গোলাপগঞ্জ

০৯ জুলাই, ২০১৮ ১৫:৫৫

গোলাপগঞ্জের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান

সিলেটের গোলাপগঞ্জে কদমরসুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করলেও বিকল্প কোনো উপায় না থাকায় ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই পাঠদান অব্যাহত রয়েছে। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা রয়েছেন শঙ্কায়।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, আমুড়া ইউনিয়নে অবস্থিত কদমরসুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ৩৫ শতাংশ জমিতে ১৯৪৬ সালে স্থাপিত হয়। এর পর ১৯৯৫ সালে এলজিইডির অর্থায়নে একটি ভবন নির্মাণ করা হয় । চার কক্ষ বিশিষ্ট এই ভবনটির নির্মাণ কাজ নিম্ন মানের হওয়ায় বর্তমানে ভবনটির ছাদে, দেয়ালের বাইরে ও ভেতরের ছাদের অনেকাংশে পলেস্টার খসে পড়ছে এবং ছাঁদ ও পিলারে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ফাটল দেখা দিয়েছে।

এছাড়াও বর্ষা মওসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ দিয়ে পানি পড়তে দেখা যায়। এতে বই খাতা ভিজে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কক্ষে পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটছে।

ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বিদ্যালয়ের ৪ জন শিক্ষক ১ম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থীকে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান করতে বাধ্য হচ্ছেন।

মোহনা আক্তার নামে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, ‘ক্লাস করতে আমাদের ভয় লাগে। বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় আমাদের এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বাধ্য হয়ে ক্লাস করতে হয়।

ডালিম আহমদ নামের এক অভিভাবক জানান, আমার দুটি ছেলে মেয়ে বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়া করে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে তাদের স্কুলে পাঠাতে ভয় লাগে। আমরা অপারগ হয়ে তাদের স্কুলে পাঠাতে হয়।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আম্বিয়া কুলসুম চৌধুরী জানান, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে সুনামের সাথে পরিচালিত হচ্ছে। ২২ বছর আগে বিদ্যালয়ের নির্মিত ভবনটির প্লাস্টার ধসে পড়া শুরু হয়েছে। ভবনটি অত্যন্ত নিম্ন মানের নির্মাণ কাজের কারণে বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। পলেস্টার একে একে খসে পড়ছে। ক্লাস করতে আমাদেরও ভয় লাগে। ক্লাস করার বিকল্পও কোন ব্যবস্থা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করাতে হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এস এ মালেক জানান, বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একাধিকবার উপজেলা শিক্ষা অফিসে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে অভিযোগ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হামিদ সরকার স্কুল পরিদর্শন করে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নতুন ভবন নির্মাণে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।

এ বিষয়ে গোলাপগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হামিদ সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। ভবন ঝুঁকিপূর্ণের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম জানান, আমি বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণের বিষয়টি জেনেছি। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত