সিলেটটুডে ডেস্ক

০২ নভেম্বর, ২০১৮ ১৯:৩৮

হবিগঞ্জ-২ আসনে মনোনয়ন চান সাবেক শাবি ছাত্রলীগ নেতা মাছুম

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন ‌দাবি করেছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোঃ মাছুম বিল্লাহ চৌধুরী। শুক্রবার (২ নভেম্বর) বেলা ৩টায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
 
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা উপ-কমিটির সদস্য মোঃ মাছুম বিল্লাহ আশা প্রকাশ করেন, উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ গ্রাম, ঐতিহাসিক বিভিন্ন নিদর্শন ও বিস্তীর্ণ হাওরসমৃদ্ধ স্থান বানিয়াচংকে আরও ঢেলে সাজিয়ে সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ঘটানো যেতে পারে। উপজেলা সদরের সাথে ইউনিয়নগুলোর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে পানি ঠিকমতো হয়না। আবার মৌসুম শেষ হয়ে গেলেও জলাবদ্ধতা থেকে যায়। এসব কারণে কৃষকরা সময়মত চাষাবাদ করতে পারছেন না। এতে কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি। তাই অতিসত্ত্বর এই সমস্যাগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করে এর সমাধান করা দরকার। আর এজন্য এলাকাবাসীসহ সকলকে এগিয়ে আসা উচিত।

সিলেট বিভাগের ভাটি অঞ্চলের প্রবেশদ্বার খ্যাত আজমিরীগঞ্জ উপজেলা। আজমিরীগঞ্জে অবকাঠামোগত উন্নয়ন বর্তমান সরকারের আমলে অভাবনীয়ভাবে সম্পন্ন হলেও, অবহেলিতই রয়ে গেছে নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা। ধারাবাহিকভাবে অবহেলার কারণে বর্তমানে নৌ-যোগাযোগ প্রায় বিলীন হবার পথে। অথচ নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে পারলে অত্র অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি ঘটবে।

বর্তমান উন্নয়নমুখী আওয়ামী লীগ সরকারের এসময়টিতে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হলে ভাটিবাংলা অধ্যুষিত এ আসনের তৃণমূল মানুষের জীবনমান উন্নয়নে আমি নিজের রাজনৈতিক জীবন উৎসর্গ করতে চাই।

তিনি আরো বলেন, আমি ছাত্রজীবন থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে ও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিজেকে গড়ে তুলতে চেয়েছি। শাবিপ্রবিতে অধ্যয়নের সময়ে ছাত্রদল ও শিবির ক্যাডাররা আমাকে দুইবার প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে নৃশংসভাবে হামলা চালায়। ২০০৪ সালের মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব কর্তৃক আয়োজিত একটি বার্যিক সভায় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আমি যোগদান করি। সেখান থেকে তৎকালীন ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জনের একটি গু-াবাহিনী আমাকে ধরে নিয়ে আসে শাকসু ভবনের সামনে। সেখানে আমার উপর চালানো হয় বর্বরোচিত নির্যাতন। ওই বাহিনী আমাকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার মাথা থেকে শুরু করে সমস্ত শরীরে গুরুতর আঘাত করে। গুরুতর আঘাতসহ সমস্ত শরীরে আঘাত করে। দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসার পর আমি সুস্থ হই। এখনো শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছি সেই নির্যাতনগুলোর বেদনা।
এছাড়া ২০০০ সালে জামায়াত-বিএনপি বঙ্গবন্ধু হলের নাম পরিবর্তন করে জিয়ার নামে নামকরণ করার অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু সকল নির্যাতন, ভয়ভীতিকে উপেক্ষা করে আমরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলন গড়ে তুলি। ছাত্রলীগের কঠিন ও ইষ্পাতদৃঢ় আন্দোলনের মুখে সাইফুর রহমান গংরা বঙ্গবন্ধুর নাম পরিবর্তন করার অপচেষ্টা থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল।

২০০৬ সালে তৎকালীন দুর্নীতিবাজ ভিসি মোসলেহ উদ্দীনের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে এক নজিরবিহীন আন্দোলন হয়েছিল। সেই আন্দোলনে আমরা ভিসিকে পদত্যাগে বাধ্য করেছিলাম।

এরপর ১/১১’র সময়ে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেলেও জননেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তির লক্ষ্যে সকল ছাত্র-আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি।
তাই বানিয়াচং উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের সাধারণ কৃষক পরিবারের একজন সন্তান হিসেবে আমি ভাটিবাংলার গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত রাখার যে শপথ করছি, আশা করছি স্থানীয় জনগণ ও আমার দলের নীতিনির্ধারক মহল আমার এ আবেদনে সাড়া দিয়ে আমাকে নৌকা প্রতীকে হবিগঞ্জ-২ আসনে নির্বাচনের সুযোগ দেবেন।

সংবাদ সম্মেলনে মোঃ মাছুম বিল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জগলু চৌধুরী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ মকদ্দুছ আলী, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্য উপ-কমিটির সদস্য ডাঃ নাজরা চৌধুরীসহ দুই শতাধিক নেতাকর্মী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত