সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

০৫ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৭:১১

মান্নানকে পূর্ণ মন্ত্রী দেখতে চান সুনামগঞ্জবাসী

সজ্জন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান এমপিকে পূর্ণ মন্ত্রী দেখতে চান জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জবাসীসহ সুনামগঞ্জ জেলাবাসী। সুনামগঞ্জবাসী মনে করেন, সৎ, যোগ্য, বিনয়ী এই মানুষটি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নতুন মন্ত্রী সভায় থাকবেন। হাওরাঞ্চলবাসীর প্রত্যাশার প্রতিধ্বনিও ঘটাবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা

প্রসঙ্গত, ১৯৮৬ সাল থেকেই জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হিসাবে পরিচিত প্রগতিশীল সরকারি কর্মকর্তা এমএ মান্নান। তিনি তখন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক ছিলেন। ১৯৯৬ সালে নির্বাচন কমিশনে ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব হিসাবে পদায়ন করা হয় তাঁকে। সেই নির্বাচনে প্রায় ২০ বছরের সেনা শাসনের অবসান ঘটে। নির্বাচনে জয়ী হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর জেনেভা দূতাবাসের দায়িত্ব নেন তিনি। ২০০১ সালে নির্বাচনে পুনরায় তাঁকে নির্বাচন কমিশনে পদায়ন করা হয়। বিএনপি নেতৃবৃন্দ ওই সময় কথা তোলেন ৯৬’এর নির্বাচনে তাদের ক্ষতি করেছেন এমএ মান্নান। দুই সপ্তাহের মাথায় তাঁকে নির্বাচন কমিশন থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

এরমধ্যেই তত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেয়। এম এ মান্নানকে বিসিকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নির্বাচন হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয় হয় । ২০০৫ সালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এমএ মান্নান। ২০০৬ এর জাতীয় নির্বাচনে দলের মনোনয়ন দেওয়া হয় তাঁকে। ওই সময় ৩০০ আসনেই আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করেন। ২০০৮ সালে আবার আওয়ামী লীগ নির্বাচনে গেলে এমএ মান্নানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। বিশাল ভোটের ব্যবধানে ওই নির্বাচনে জয়ী হন তিনি।

২০০৯ সালে দলের কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয় এমএ মান্নানকে। ওই বছরেই প্রতিরক্ষা, জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় কমিটিতে যুক্ত করাসহ সরকারের ৩ বছরের মাথায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করা হয় তাঁকে। ৩ বছর পর আরেকবার দলের কাউন্সিলে তাঁকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাখা হয়। সুনামের সঙ্গে দলীয় প্রধানের দেওয়া দায়িত্ব পালন করেন এমএ মান্নান। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আবার দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয় তাঁকে।

ওই নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন সজ্জন এই রাজনীতিক। নির্বাচনের পর প্রথমে তাঁকে অর্থ প্রতিমন্ত্রী, এক মাসের মাথায় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীরও দায়িত্ব দেওয়া হয়। সরকারের ৫ বছরের শাসনামলে নিজের জেলায় আরো বেশি জনপ্রিয় হতে থাকেন তিনি। জাতীয়ভাবেও সৎ, বিনয়ী ও অভিজ্ঞ এমএ মান্নানের পরিচিতি আরো বেড়ে যায়।

একাদশ জাতীয় নির্বাচনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দীর চেয়ে এক লাখ ১০ হাজার ভোট বেশি পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এই নির্বাচনী এলাকায় তুলনামূলক ভোটার উপস্থিতিও ছিল বেশি। বিজয়ী এমএ মান্নানকে নতুন মন্ত্রী সভায় পূর্ণমন্ত্রী দেখতে চান তাঁর নির্বাচনী এলাকার রাজনৈতিক কর্মীরা।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বলেন,‘ভালো মানুষের কদর সাধারণের কাছে যে রয়েছে, এমএ মান্নানই উদাহরণ। তাঁকে দলমত নির্বিশেষে জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জের মানুষ ভালবাসেন। তিনি নির্বাচিত হবার পর জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জে যে উন্নয়ন হয়েছে, বিগত ৪০ বছরেও তা হয়নি।’

জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজুও একই ধরণের মন্তব্য করেন। এই দুই নেতা দাবি করেন, জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জবাসী এমএ মান্নানকে পূর্ণমন্ত্রী দেখতে চায়।

সুনামগঞ্জের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পরিমল কান্তি দে বলেন,‘রাজনীতিবিদ এমএ মান্নানের পূর্ণমন্ত্রী হবার সকল গুণাবলি রয়েছে। তিনি সৎ ও মেধাবী, দেশপ্রেমের কোন ঘাটতি নাই তাঁর। তিনি নির্বাচনী এলাকার বাইরে পুরো জেলাবাসীর উন্নয়নে কাজ করেছেন। তাঁকে মন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া প্রয়োজন।'

আপনার মন্তব্য

আলোচিত