হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

১৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৯:২৩

হবিগঞ্জে মাত্র ৫ মিনিটেই মিলছে বিদ্যুৎ সংযোগ

‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ প্রধানমন্ত্রীর এই শ্লোগানকে বাস্তবায়ন করতে হবিগঞ্জে ফেরি করে গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ।

সরকার নির্ধারিত ৪৫০ টাকা জামানত জমাদানের মাত্র ৫ মিনিটেই গ্রাহদের বাড়িতে গিয়ে বিদ্যুতের মিটার ও তার সংযোগ দিয়ে ঘরে বাতি জ্বেলে দিচ্ছেন পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী। এতে করে গ্রাহকদের এখন আর বিদ্যুৎ অফিসে যেতে হচ্ছে না। বিদ্যুৎ বিভাগের এমন উদ্যোগটি এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

আগে যেখানে পল্লী বিদ্যুতের লাইন নিতে গিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের পড়তে হতো নানান হয়রানির মধ্যে। এই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন ও গ্রাহক হয়রানী কমানোর জন্য সাধারণ জনগণের আশীর্বাদ হয়ে এসেছে ‘আলোর ফেরিওয়ালা’।

নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই বিদ্যুৎ ফেরি করে আসছে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এই পর্যন্ত কয়েক শতাধিক বাড়িতে দেয়া হয়েছে সংযোগ। হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একদল কর্মকর্তা-কর্মচারী দিনব্যাপী ভ্যানে করে মিটার প্রত্যাশীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এভাবেই দিচ্ছেন সংযোগ। তাঁদের (বিদ্যুৎ কর্মকর্তা) আন্তরিকতায় ও সেবায় মুগ্ধ সাধারণ মানুষ।

বছরের প্রথম দিন থেকে কার্যক্রম চললেও বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (অর্থ) মো. জয়নাল আবেদিন। এ সময় তিনি হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. শফিউল আলম, হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. মোতাহার হোসেন, ব্রাক্ষণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলতাফ হোসেন চৌধুরী, হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম (কারিগরি) মো. রেজাউল করিম, হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম (সদস্য সেবা) মোহাম্মদ শামিউল আশরাফ ও হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পরিচালনা কমিটির সচিব মো. জালাল উদ্দিন রুমি প্রমুখ।

বিদ্যুৎ পেয়ে গৃহবধূ আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘সারা জীবন অন্ধকারে ছিলাম। ছেলে মেয়েরা ঠিকভাবে লেখাপড়া করতে পারত না। এখন বিদ্যুৎ পাওয়ায় আমরা অনেক খুশি।’

তিনি বলেন- ‘বিদ্যুৎ পেতে আমাদের কোন কষ্ট করতে হয়নি। ফোন করার সাথে সাথেই অফিস থেকে লোকজন এসে বিদ্যুৎ দিয়ে গেছে।’

অন্য এক সুবিধাভোগী আবিদুল মিয়া বলেন- ‘বিদ্যুৎ পেতে একদিকে যেমন কোন কষ্ট করতে হয়নি। অন্যদিকে টাকাও খরচ হয়নি। সরকার নির্ধারিত ৪৫০ টাকা দিয়ে ঘরে বসে বিদ্যুৎ পেয়েছি।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিদ্যুৎ অফিসের লোকজনকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পরিচালনা কমিটির সচিব মো. জালাল উদ্দিন রুমি বলেন- ‘একটা সময় ছিলো বিদ্যুৎ পেতে মানুষের হয়রানির শেষ ছিলো না। কিন্তু এই ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। ফোন করার ৫ মিনিটেই বিদ্যুৎ পাওয়া অকল্পনীয় একটি বিষয়।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম (সদস্য সেবা) মোহাম্মদ শামিউল আশরাফ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ এ শ্লোগানে ৫ মিনিটে ‘আলোর ফেরিওয়ালার’ মাধ্যমে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়া হচ্ছে। যাদের বাড়িতে এখনো বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি তাদের যদি খুঁটি লাগে তাহলে আগামী সাত দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। খুঁটি দিয়েই তাদের বাড়িতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়া হবে।’

তিনি বলেন- ‘অনেক গ্রামে বিদ্যুৎ আছে, কিন্তু কিছু সংখ্যক বাড়িতে নেই। তারা ফোন করলেই আমরা গিয়ে বিদ্যুৎ দিয়ে আসি। গ্রাহক হয়রানি বন্ধ ও দুর্নীতিমুক্ত করতেই এ ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (অর্থ) মো. জয়নাল আবেদিন বলেন- ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দ্রুত প্রত্যেকটি এলাকায় বিদ্যুতায়ন করা হচ্ছে। আমরা আশা করি ২০১৯ সালের মধ্যে দেশের কোথাও বিদ্যুৎবিহীন থাকবে না।’ একেবারে প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ পৌঁছে
দেয়া হবে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত