বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি

১৮ মার্চ, ২০১৯ ০০:২৪

বিয়ানীবাজারে ফ্যাক্টর হবে বিএনপি ও জামায়াতের ভোট

বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও নিবন্ধন বাতিল হওয়া দল জামায়াতে ইসলামীর কোন প্রার্থী। প্রথম দিকে তাদের নেতাকর্মী, সমর্থক ও ভোটারদের মাঝে তেমন কোন আগ্রহ না থাকলেও নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে দল দুটির কর্মী, সমর্থক ও ভোটাররা ক্রমেই নির্বাচনী আমেজে সম্পৃক্ত হয়ে উঠছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা বিএনপি জামায়াতের সমর্থক ভোটারদের নির্বাচনী মাঠে টানতে বিশেষ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

এ উপজেলায় দল দুটির ভোট নির্বাচনী মাঠে জয় পরাজয়ে ফ্যাক্টর হয়ে উঠছে। দল দুটির উল্লে­খযোগ্য ভোট যে প্রার্থীর বাক্সে পড়বে ফলাফল নির্ধারণে তা ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিগত উপজেলা নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের একজন করে প্রার্থী ছিলেন। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আতাউর রহমান খান ও বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল কাশেম পল্ল­বের সাথে অনেকটা সমানতালে লড়াই করেছেন বিএনপির প্রার্থী আব্দুল মান্নান এবং জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা ফয়জুল ইসলাম। এবারের নির্বাচনে বিএনপি জামায়াত অংশ না নেয়ায় তাদের সমর্থকদের ভোট টানতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ৩ প্রার্থী, আনারস প্রতীকের জাকির হোসেন, হেলিকপ্টার প্রতীকের আবুল কাশেম পল্ল­ব এবং মোটর সাইকেল প্রতীকের শামীম আহমদ মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। বিএনপি সমর্থকদের ভোট বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়লেও জামায়াতে ইসলামীর ভোটের অধিকাংশই যে কোন একক প্রার্থীর বাক্সে পড়তে পারে।

ভোটের মাঠ পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, বিএনপি সমর্থকদের ভোট টানতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাকির, পল্লব ও শামীম স্ব স্ব কৌশলে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এক্ষেত্রে প্রত্যেকেই অঞ্চলভেদে কমবেশি সফল হচ্ছেন। তবে বিএনপির উপজেলার নেতৃবৃন্দকে নির্বাচন নিয়ে প্রকাশ্যে কোন ভূমিকা রাখতে দেখা যাচ্ছে না। তারা নির্বাচনের বিষয়ে প্রকাশ্যে নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় রয়েছেন। তবে সমর্থক ভোটাররা ক্রমে সক্রিয় হয়ে উঠায় নেতারাও ভিতরে ভিতরে নানা কলকাঠি নাড়ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে।

 এদিকে জামায়াতে ইসলামীর দলীয় সমর্থক ভোটাররা দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের নির্দেশনা মোতাবেক ভোটাধিকার প্রয়োগ করে থাকেন। এবারের নির্বাচনেও তার খুব একটা ব্যত্যয় ঘটার সম্ভাবনা নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জামায়াত সমর্থকদের ভোট টানতে হেলিকপ্টার প্রতীকের পল্লব ও আনারস প্রতীকের জাকির হোসেনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে।

তাই আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে বিরোধী বলয় বিএনপি ও জামায়াতের ভোট ব্যাংকই শেষ পর্যন্ত জয় পরাজয়ে ফ্যাক্টর হয়ে উঠছে। ফলে তাদের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের কদরও সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের কাছে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত, এ অবস্থায় সারাদেশের ন্যায় বিয়ানীবাজারেও রাজনৈতিক ভাবে বেকায়দায় থাকা বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীরা সমর্থন প্রত্যাশাকারী প্রার্থীদের সাথে আগামী দিনের রাজনৈতিক নানা বিষয়-আশয় নিয়ে দরকষাকষি সেরে নিচ্ছেন পৃথক পৃথকভাবে। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিবতায় থাকা যে প্রার্থীর সাথে ঐ দলগুলোর নেতাদের হিসাব নিকাশ মিলবে সেই প্রার্থীর বাক্সেই পড়বে সমর্থকদের ভোট। আর সেই দরকষাকষি ও হিসাব নিকাশ নির্বাচনের শেষদিকেই চূড়ান্ত হবে। সে পর্যন্ত মাঠের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখছে বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত