নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ মার্চ, ২০১৯ ০১:০১

বিএনপিবিহীন নির্বাচনেও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আ. লীগের প্রার্থীরা

সিলেটের ১২ উপজেলায় নির্বাচন আজ

সিলেটের ১২ টি উপজেলায় ১৭৫ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে আজ। ১৭ লাখ ৯৩ হাজার ৭১০ ভোটার নির্বাচন করবেন তাদের প্রতিনিধি। বিএনপিবিহীন এই নির্বাচনেও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের। এবার বেশিরভাগ উপজেলায়ই লড়াই হবে আওয়ামী ও আওয়ামী বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে। তবে এই লড়াইয়ে কিছু এলাকায় বিএনপির বহিস্কৃত প্রার্থীরাও এগিয়ে রয়েছেন।

মূলত এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও দলীয় কোন্দলের কারণে ক্ষামতাসীন দলের নেতারা দ্বিধা বিভক্তিতে পড়েছেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে বিদ্রোহী বিপাকে পড়েছেন নৌকার প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যে ভোট কাড়াকাড়ির মধ্যে কয়েকটি উপজেলায় চমক দেখাতে পারেন বিএনপির প্রার্থীরা।
 
সিলেটের ১২ উপজেলার ৭টিতেই ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নেতা প্রার্থী হয়েছেন। এগুলোতে আওয়ামী লিগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ১৬ জন। ৫টিতে রয়েছেন নৌকার একক প্রার্থী। এছাড়া জাতীয় পার্টির ৪ জন, বিএনপি নেতা ৬ জন এবং ইসলামী ঐক্যজোট ও স্বতন্ত্রসহ ১৯ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

আজ (সোমবার) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কে কাকে ভোট দিয়ে জয়ী করবেন এই হিসেব ইতোমধ্যে ভোটারা করে ফেললেও ভোটের পরিবেশের উপড় নির্ভর করবে জয় পরাজয়, এমনটাই বলছেন সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার ভোটাররা।

সিলেটের সদর উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নৌকা প্রতীকে আশফাক আহমদের প্রধান প্রতিদন্দ্বী হিসেবে আছেন (আওয়ামী বিদ্রোহী) স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট নুরে আলম সিরাজী (মোটরসাইকেল)। এ উপজেলায় বিএনপি, ইসলামী ঐক্যজোট ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী থাকলেও আশফাক আহমদের সাথে মূল লড়াইয়ে নুরে আলম সিরাজীই থাকবেন বলে জানা যায়।  
 
বিশ্বনাথ উপজেলায় এবার ত্রিমুখী লড়াই হবে চেয়ারম্যান পদে। বর্তমান চেয়াম্যান হওয়ার সুবাদে লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সোহেল আহমদ চৌধুরী। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের কুন্দল ও নিজের যোগ্যতার প্রেক্ষিতে সোহেল এখনো এলাকায় অনেক জনপ্রিয়। এদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুনু মিয়ার প্রচার প্রচারণায় নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি থাকলেও প্রভাব বিস্তার নিয়ে স্থানীয় নেতারদের কুন্দল কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তার জন্য। জানা যায়, প্রচার প্রচারণায় স্থানীয় নেতাকর্মীরা তার সাথে গিয়ে ফটোসেশন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিলেন। ফটোসেশন শেষ হলেই ভোটাদের অন্য প্রতীকে ভোট দেওয়ার কথা বলতেন বলেও জানা গেছে।

তবে এই লড়াইয়ে আরেক যুদ্ধা যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা মিজবাহ উদ্দিনও অনেক শক্ত অবস্থানে আছেন। সোহেল এবং নুনু মিয়া হারের কারণ হতে পারেন তিনি। প্রবাসী হলেও জামাতের প্রায় ১০ হাজার আছে তার ঝুলিতে। এই ১০ হাজার ভোটের ভিতেই তিনি নির্বাচনে প্রতিদন্দ্বীতা করছেন।  

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী আছেন ছয় জন। নৌকার প্রার্থী শাহ মুজিবুর রহমান জকনের চেয়ে এই উপজেলায়ও নৌকা বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুল ইসলামের পল্লা ভারী বলে জানা গেছে। তবে এখানে বিএনপি প্রার্থী ওয়াহিদুজ্জামানের দোয়াত কলমও চমক দেখাতে পারে বলে জানা যায়।

গোয়াইনঘাট উপজেলায়ও নৌকার প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া হেলালের চেয়ে নৌকা বিদ্রোহী প্রার্থী যুক্তরাষ্ট্র আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদের (মোটর সাইকেল) এগিয়ে আছে বলে জানা গেছে। তবে চেয়ারম্যান পদে লড়াইয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম স্বপন (ঘোড়া) প্রতীক নিয়ে রয়েছেন মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতায়।

ক্ষমতাসীন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে একই রকম ভাবে বিপাকে পরেছেন দক্ষিণ সুরমা, কোম্পানীগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, কানাইঘাট উপজেলার আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত