নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ মার্চ, ২০১৯ ১৪:৫২

সিলেটে বিএনপির ৮ নেতাকর্মীকে শোকজ

সিলেটের কয়েকটি উপজেলায় বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্বাচনী প্রচারণা অংশ নেওয়ায় ৮ জনকে শোকজ করেছে সিলেট জেলা বিএনপি।

সোমবার (১৮ মার্চ) তাদের কাছে শোকজের চিঠিও পাঠানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, ‘সাজানো ও নাটকীয় এই নির্বাচন বিএনপি শুরু থেকেই বয়কট করেছে। এরপরেও সিলেট বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও দায়িত্বশীল অনেকেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। নির্বাচনে অংশ নেওয়া এবং দলের সিদ্ধান্ত না মানায় কেন্দ্রীয় বিএনপি ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে।

তিনি বলেন, শনিবার বিএনপির এক জরুরি বৈঠকে আটজনের বিভিন্ন বিষয় যাচাই-বাছাই শেষে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোমবার সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়।

তিনি আরও জানান, ‘আমরা দলের নেতাকর্মীসহ আমাদের অঙ্গসংগঠন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুরোধ করেছি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট না দেওয়ার জন্য। আর দলের নেতাকর্মীদের জন্য এটা একটা নির্দেশনা। তবুও তারা যদি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেন তাহলে এটা হবে দলের সঙ্গে প্রতারণা। আমি আশাবাদী, যারা জিয়াউর রহমানের আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করেন তারা এই সিদ্ধান্তের বাইরে কখনও যাবেন না।

এছাড়াও যাদের শোকজ করা হয়েছে তারা যদি সঠিক জবাব না দিতে পারেন তাহলে তাদের দল থেকেও বহিষ্কার করা হতে পারে। আমরা বিষয়টি কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাকর্মীসহ সিলেটের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় নেতাদেরও জানিয়েছি বলে জানান আলী আহমদ।

সূত্র জানায়, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যারা বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন তাদের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে পাঠানো হয়। সেই সূত্র ধরেই সিলেটের আট নেতাকে শোকজ করা হয়েছে।

যাদের শোকজ করা হয়েছে তারা হলেন- সিলেট জেলা বিএনপির সদস্য ইলিয়াছ মিয়া, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা আহমেদুর চৌধুরী নিলু, সিলেট সদরের খাদিমপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুল ইসলাম আজাদ, জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি হাজী চেরাগ, নাসিরুদ্দিন নাসির, মইনুদ্দিন, তোফায়েল আহমদ চৌধুরী ও জকিগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর রিপন আহমদ।

এর আগে ৩ মার্চ কেন্দ্রীয় বিএনপি যাদের বহিষ্কার করেছে তারা হলেন- জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মাজহারুল ইসলাম ডালিম, সিলেট জেলা বিএনপির সদস্য ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি জিল্লুর রহমান সোয়েব, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা শামছুল আলম, বিএনপি নেতা ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা যুবদল নেতা সুন্দর আলী, সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মাওলানা রশীদ আহমদ, জকিগঞ্জ উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি ইয়াহইয়া বেগম, জকিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলে আশরাফ মান্না, গোয়াইনঘাট উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি লুৎফুল হক খোকন, গোয়াইনঘাট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম স্বপন, গোয়াইনঘাট উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, সিলেট জেলা মহিলা দলের সাবেক সহসভাপতি খোদেজা বেগম কলি, ৫নম্বর ফতেপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক, সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি সোহেল আহমদ চৌধুরী, বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপি নেতা মিসবাহ উদ্দিন আহমদ, বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আহমদ নুর উদ্দিন, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহমান খালেদ, বিএনপি নেতা ও সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন রুবেল, বিশ্বনাথ উপজেলা যুবদল নেতা জুবেল আহমদসহ ৩২ জন।

প্রসঙ্গত, পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটে সিলেটের ১২টি উপজেলায় সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ চলছে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জের বর্তমান দুজন চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় কেন্দ্রীয় বিএনপি তাদের দল থেকে বহিষ্কার করেছে। তবে এবার ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রেও বাধা তৈরি করেছে দলটি।

দলের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (১৮ মার্চ) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট না দেওয়ার জন্য বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব বিষয়ে সিলেটে একাধিক গোপন বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত