জামালগঞ্জ প্রতিনিধি

১২ জুন, ২০১৯ ১৪:১৫

ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরুদ্ধে সরকারি বিভিন্ন খাতের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ডের সদস্যরা।

১০ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ১১ জুন জেলা প্রশাসকের কাছে তারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

সকল ওয়ার্ড সদস্যদের পক্ষে লিখিত অভিযোগে স্বাক্ষর করেন, ১নং ওয়ার্ডের সদস্য মোজাফর মিয়া, ২নং ওয়ার্ডের সদস্য হান্নান মিয়া, ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য আবুল কাশেম, ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য হানিফ মিয়া, ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য নূরুল ইসলাম, ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য হাবিবুর রহমান, ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য সোহেল মিয়া, ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য কাদির মিয়া, ৯নং ওয়ার্ডের ওয়ার্ড সদস্য ছমির আলী, ৭-৮-৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য জ্যোৎস্না আক্তার।

লিখিত অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, বিগত ২০১৭ সালের ২১ মে দায়িত্ব নেওয়ায় পর থেকে চলতি ২০১৯ সালের অদ্যাবধি পর্যন্ত ইউনিয়নের মাধ্যমে আদায়কৃত হোল্ডিং ট্যাক্স, বিভিন্ন ট্রেড লাইসেন্সের নামে জমাকৃত টাকা ও খেয়াঘাটের ইজারাকৃত অর্থসহ সকল প্রকার রাজস্ব আয়ের কোন হিসাব দিচ্ছেন না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট ইউপি সচিব। সরকারি বিধি মোতাবেক জনগণের নিকট থেকে বিভিন্ন খাতের আদায় করা রাজস্ব ব্যাংকে জমা রাখার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান ও সচিব তা করেননি। সকল ওয়ার্ডের সদস্যদের তরফ থেকে সময়ে সময়ে এসব সরকারি টাকা ব্যাংকে জমা করার তাগিদ দিলেও তা করা হয়নি এবং কি পরিমাণ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে তাও কাউকে জানতে দেওয়া হচ্ছে না।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, আনুমানিক ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা আছে বলে সদস্যরা বিশ্বস্ত সূত্রে তারা জানতে পেরেছেন।

হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান ও সচিব মিলে প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে বহিরাগত কালেক্টর নিয়োগ করেছেন এবং ঐ নিয়োগকৃত কালেক্টর চেয়ারম্যান ও সচিবের নির্দেশ মোতাবেক হোল্ডিং ট্যাক্সের আদায়কৃত গ্রাহকের মূল কপিতে অধিক টাকা লিখলেও অফিস কার্বন কপিতে নামমাত্র টাকা উল্লেখ করেছেন বহিরাগত কালেক্টররা। এভাবেই পুরো ইউনিয়নের অসংখ্য গ্রাহকের কাছ থেকে বিভিন্ন খাতের টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করা হচ্ছে বলে অভিযোগে জানানো হয়।

এ ব্যাপারে উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সমীর কান্তি দে অসুস্থতাজনিত কারণে চিকিৎসা নিতে দেশের বাইরে থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।

উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রজব আলীর কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা যে অভিযোগ করেছেন সেটা আমারও অভিযোগ। কারণ, ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে ঈদ উপলক্ষে চেয়ারম্যান, মেম্বার, গ্রাম পুলিশ সবাই তিন মাসের একটা ভাতা নেবার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সচিব সমীর কান্তি দে তহবিলের টাকা ব্যাংকে জমা দেবার কথা ছিল। কিন্তু সচিব কোন টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়েই অসুস্থতাজনিত চিকিৎসার্থে দেশের বাহিরে চলে যান। পরে অতিরিক্ত দায়িত্বে আসা জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সচিব নূরুল আমিন কর্তৃক বিভিন্ন খাতের আদায়কৃত তহবিল ৯০ হাজার টাকা এবং ব্যাংকে পূর্বের জমাকৃত ৩২ হাজার টাকার হিসাব পাই।

''সচিব সমীর কান্তি দে খাতা-পত্রে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বুঝানোর পর আমি সরল বিশ্বাসে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে তাকে বলেছিলাম। কিন্তু কি কারণে তিনি ব্যাংকে টাকা জমা দেননি তা আমি জানি না। এখন চিকিৎসা শেষে সচিব কর্মস্থলে ফিরে আসার পর আমরা এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবো।''

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদ বলেন, অভিযোগটি দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত