কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

১৮ আগস্ট, ২০১৯ ২০:৩৮

কমলগঞ্জের চা বাগানের ১০টি চোলাই মদের আখড়া ধ্বংস

ইউপি চেয়ারম্যান, পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্যের সহায়তায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কানিহাটি চা বাগানে এলাকাবাসী চোলাই মদ তৈরির দশটি আখড়া ধ্বংস করে দিয়েছে।

শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চা বাগান এলাকায় মাদক বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই মদ তৈরির আখড়া ভাঙা হয়।

দেশের বিভিন্ন চা বাগান সমূহে ব্রিটিশ আমল থেকে প্রচলিত হয়ে আসা মাদকের যে বেচা কেনা ছিল তা এখনও অব্যাহত আছে। সারাদিন কঠোর পরিশ্রমের পর সন্ধ্যা হলেই মাদক সেবন করে মাতাল শ্রমিকরা পরিবারে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের সাথে ঝগড়াঝাঁটি, হানাহানি, ভাঙচুর সহ নানা ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। ফলে আর্থিক  ও শারীরিক ক্ষতি ছাড়াও পরিবার সদস্যদেরকে বিপর্যস্ত করে ফেলছে চা বাগানের মাদকাসক্ত পুরুষরা।

মাদক বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার বিকালে শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমদ, শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী, ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সীতারাম বীন ও জাগরণ যুবফোরাম সভাপতি মোহন রবিদাসের নেতৃত্বে কানিহাটি চা বাগানে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়।

এ অভিযানে কানিহাটি চা বাগানের ১০টি শ্রমিক ঘরের চুলাই মদ তৈরি আখড়া ভেঙ্গেচুরে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ অভিযানে কানিহাটি চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি প্রতাপ রিকিয়াসনও উপস্থিত ছিলেন।

শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এ ইউনিয়নের মূল ও ফাঁড়ি বাগানে পুলিশি উপস্থিতিতে সামাজিক বৈঠক করে চুলাই মদ তৈরি বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। সাথে সাথে চা বাগানে যাতে কোন প্রকার মাদক ব্যবসা না হয় তারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এর পরও কিছু সংখ্যক মাদক ব্যবসায়ী নিজ ঘরে চুলাই তৈরি অব্যাহত রেখেছিল। তাই শনিবার অভিযান চালিয়ে সেই চুলাই মদের আখড়া ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।

শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী চা বাগানে চুলাই মদের আখড়া গুড়িয়ে দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চা শ্রমিকরা খুবই স্বল্প আয় করেন। এর মাঝে মাদকে সব টাকা ব্যয় করে নিজের শারীরিক ক্ষতির সাথে পরিবার পরিজনের বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে এ দিক নিয়ে সামাজিক বৈঠকে বোঝানো হয়েছিল। তার পরও চুলাই মদ তৈরি হওয়ার এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। প্রথম দফা চুলাই মদের আখড়া ভেঙ্গে দেওয়া হলো। এর পরও চুলাই মদ তৈরি ও ব্যবসা করলে পরবর্তীতে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত