বড়লেখা প্রতিনিধি

১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ২১:০৬

প্রশাসনের উদ্যোগে বড়লেখায় জুয়ার স্থায়ী আস্তানা উচ্ছেদ

টিলার উপর টিনশেডের একটি ঘর। ঘরটিতে কেউ বসবাস করে না। ঘরটি তৈরি করা হয়েছে জুয়া খেলার জন্য। অনেকদিন ধরে ঘরটিতে নিয়মিত জুয়ার আসর বসছে।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় প্রশাসন মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নের ইটাউরি বাজারের অদূরে জুয়াড়িদের এই স্থায়ী স্থাপনাটি ভেঙে উচ্ছেদ করেছে। সেই সাথে জুয়ার আসর বসার অভিযোগে ইটাউরি বাজারের একটি চায়ের দোকানও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নের ইটাউরি বাজারের অদূরে একটি টিলায় ঘর তৈরি করে দীর্ঘদিন থেকে জুয়ার আসর বসছে। জুয়া খেলার জন্য টিনশেড দিয়ে ঘরটি তৈরি করা হয়। পাশাপাশি ওই বাজারের একটি দোকানেও চলত জুয়া খেলা। প্রতিদিনই বড়লেখা ও আশপাশের উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে জুয়াড়িরা এসে জুয়া খেলত। এতে এলাকার বিভিন্ন বয়সের মানুষও অংশ নিয়ে সর্বস্ব হারায়। জুয়ার টাকা মেলাতে তারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ত।

স্থানীয়ভাবে খবর পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে অভিযান চালিয়ে টিলার উপরের দীর্ঘদিনের জুয়ার আস্তানাটি ভেঙে জায়গাটি সম্পূর্ণ খালি করে দেওয়া হয়। এরপর জুয়া খেলার সরঞ্জামগুলো ভেঙে ফেলা হয়। এছাড়া জুয়ার আসর বসার অভিযোগে বাজারে অভিযান চালিয়ে জবরুল নামের ব্যক্তির চায়ের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এসময় কাউকে আটক করা যায়নি। দুপুর ১২টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত এই অভিযান চলে।

উচ্ছেদকালে বড়লেখা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তাজ উদ্দিন, শাহবাজপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (পুলিশ পরিদর্শক) মোশাররফ হোসেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হক, বড়লেখা পৌরসভার কাউন্সিলর জেহীন সিদ্দিকী, ইউপি সদস্য সাজু আহমদ, শামীম আহমদ, সিরাজ উদ্দিন, কবির আহমদ, রশিদ আহমদ সুনাম, মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুমন আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বড়লেখা থানা পুলিশ জানিয়েছে, কান্দিগ্রামের কটন আলী, খালেদ আহমদ, মুজিব, জিতুল আহমদ, ইটাউরি গ্রামের রুবেল আহমদ, আলতাফ হোসেন ও কবিরা গ্রামের মাশুক আহমদ টিলায় ঘর তৈরি করে এই জুয়ার আসার পরিচালনা করতেন।

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পাই। তথ্য যাচাই বাচাই করি। প্রতিদিনই খেলা চলত। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে অভিযান চালানো হয়। টিলার উপরে ঘর তৈরি করে খেলা চলত। সরঞ্জামসহ এটি ভেঙে দেওয়া হয়। জুয়া খেলা হত এরকম একটি চায়ের দোকানও বন্ধ করা হয়েছে। এসময় কাউকে আটক করা যায়নি।’

বড়লেখা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ বলেন, ‘বড়লেখা উপজেলাকে মাদক এবং জুয়ামুক্ত করার বদ্ধ অঙ্গিকার নিয়ে আমরা মাঠে নেমেছি। যতদিন পর্যন্ত মাদক এবং জুয়ামুক্ত হবে না ততদিন পর্যন্ত প্রশাসনকে সাথে নিয়ে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। যে এলাকায় এই ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ড দেখা যাবে; তারা এই খবর যেন দ্রুত জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে জানায়।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত