বানিয়াচং প্রতিনিধি

১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ২০:১৭

বানিয়াচংয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালাচ্ছেন ২ বৃদ্ধা

বঞ্চিত বয়স্ক ভাতা থেকে

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ও উপার্জনের অক্ষম ২ বৃদ্ধা ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন চালাচ্ছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মন জোগাতে ব্যর্থ হওয়ায় ভাতা পাওয়ার যোগ্য হলেও বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তাদের।

বানিয়াচং উপজেলা সদরের ২নং উত্তর-পশ্চিম ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ঘাগড়া কোনা মহল্লার মৃত আব্দুর রহিম মিয়ার স্ত্রী আয়েশা বেগম (৭০) ও একই মহল্লার মৃত সামছু মিয়ার স্ত্রী লালবানু (৬৭)।  তারা দুইজনই জীবিকার তাগিদে এখন রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করে বেড়ান। তাদের কপালে এখনো জুটেনি সরকারের কোনো সুবিধা। বিশেষ করে বিধবা ভাতা বা বয়স্ক ভাতার কোনো কার্ড। তাদের কোনো ছেলে সন্তান না থাকায় মেয়ের বাড়িতেই বসবাস করেন এবং ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।  

দুই বৃদ্ধার সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে ওই এলাকার সরকারি একটি জায়গায় উপর ছোট ঘর বানিয়ে কোনো রকম দিনাতিপাত করছেন তারা। তবে মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর স্বামী মারা যাওয়ায় মেয়েসহ নাতি-নাতনি এখন এদের উপরই নির্ভরশীল। বয়সের ভারে কর্মশক্তি হারানো অনেকটা অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে এই দুই বৃদ্ধার। তবে এখনো তাদের কপালে জুটেনি বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতার কার্ড।

দুই বৃদ্ধা বলেন, আমরা রাজনীতি বুঝি না। ওয়ার্ড জনপ্রতিনিধিকে খুশি করার সামর্থ্যও আমাদের নেই। আর কতো বয়স হলে তারা বয়স্ক ভাতার কার্ড পাবো।

তারা জানান, একটি বয়স্ক ভাতা কার্ডের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলেছেন। কিন্তু এখনো কোনো বয়স্ক ভাতার কার্ড বা সরকারি বা বেসরকারি কোনো ভাতা পাননি তারা। খেয়ে পরে বাঁচার জন্য শুধু একটা বয়স্ক ভাতার কার্ড চান তারা।

অশ্রুসিক্ত নয়নে আয়েশা বেগম জানান, এই পর্যন্ত আমি কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাইনি। কোনো বয়স্ক ও বিধবা ভাতাও না। ভিক্ষা করেই খেয়ে না খেয়ে জীবন-যাপন করছি।

এ বিষয়ে কথা হয় বানিয়াচং ২নং উত্তর-পশ্চিম ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার মনফর উল্লাহর সাথে। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে মাত্র একটি বয়স্ক ভাতার নাম দেয়ার জন্য বলেছেন। তাই আমি এদেরকে না দিয়ে আমি অন্য আরেকজনকে দিয়ে দিয়ে দিছি। আগামীতে কোনো কিছু আসলে তাদেরকে ভাতার আওতায় আনার চেষ্টা করবো।

এ ব্যাপারে ২নং উত্তর-পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়ারিশ উদ্দিন খানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, দেশের বয়োজ্যেষ্ঠ ও স্বল্প উপার্জনক্ষম অথবা উপার্জনের অক্ষম বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে পরিবার ও সমাজে মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে বয়স্ক ভাতা কর্মসূচীর চালু করা হয়। বর্তমানে সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে বাস্তবায়নে অঙ্গিকার হিসেবে ২০২১ সালের মধ্যে বয়স্ক ভাতা ভোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।


আপনার মন্তব্য

আলোচিত