নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:২৪

সিলেট চেম্বার নির্বাচন: দুই বলয়ে বিভক্ত ব্যবসায়ীরা

বিভক্তি দেখা দিয়েছিলো চেম্বার সদস্যদের মধ্যে। সেই বিভক্তি গড়িয়েছিলো উচ্চ আদালত পর্যন্ত। আদালতের নিষেধাজ্ঞায় সঠিক সময়ে নির্বাচন দিতে পারেনি নির্বাচিত কমিটি। বসানো হয় প্রশাসক। এরপর প্রশাসক নির্বাচনের উদ্যোগ নিলে আবার নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত। ফলে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাচন নিয়েই দেখা দিয়েছিলো শঙ্কা।

তবে শঙ্কা দূর করে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর সিলেটের ব্যবসায়ীদের এই শীর্ষ সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

নির্বাচন আয়োজনের সব প্রস্তুতি চুড়ান্ত করেছে নির্বাচনী পরিচালনা বোর্ড। আর প্রার্থীরা ব্যস্ত শেষ মূহূর্তের প্রচারণায়। এবারের চেম্বার নির্বাচনে দুটি বলয়ে বিভক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন প্রার্থীরা।

নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৪৬৫ জন। আর পরিচালনা পরিষদের ২২টি পদে প্রার্থী হয়েছেন ৪১ জন। এদের মধ্যে টাউন এসোসিয়েশন শ্রেণীতে কোন প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় একমাত্র প্রার্থী শমশের জামালকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।

জানা যায়, ‘সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ’ ও ‘সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদ’ এই দুই ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ব্যবসায়ীদের দুটি বলয়। এই দুই প্ল্যাটফরমের প্রার্থীরা তফসিল ঘোষণার পর থেকেই প্রচার প্রচারণা শুরু করেন। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া, মতবিনিময় সভার আয়োজনের মাধ্যমে নিজেদের প্রাচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। চেম্বারের সাবেক অনেক নেতাও ভিড়ছেনে এসব প্যানেলের সাথে। নিজেদের পছন্দের প্যানেলের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা। সবমিলিয়ে সিলেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে এখন বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ।

ইতোমধ্যো নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে প্রতিদ্বন্দ্বি দুই গ্রুপ। নির্বাচনী প্রচারণায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করলেও রয়েছে পারষ্পারিক অভিযোগও। ‘সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদ’এর বিরুদ্ধে চেম্বারে পরিবারতন্ত্র কায়েমের অভিযোগ করেছেন ‘সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ’এর প্রার্থীরা। তাদের অভিযোগ, দুটি পরিবার থেকেই এই প্যানেলের বেশিরভাগ প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। এই দুই পরিবারের একাধিক সদস্য এর আগেও সিলেট চেম্বারের শীর্ষ পদে ছিলেন।

তবে ‘সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদ’এর নেতারা বলছেন, কেউ জোর করে চেম্বার দখল করছে না। সবাই ভোটে দাঁড়িয়েছে। ভোটাররা যাদের যোগ্য মনে করবে তাদের নির্বাচিত করবে।

সিলেট চেম্বারেরর পরিচালক পদে অর্ডিনারি ক্যাটাগরিতে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদে প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন আবু তাহের মো. শোয়েব, মো. মামুন কিবরিয়া সুমন, এনামুল কুদ্দুস চৌধুরী, মুকির হোসেন চৌধুরী, হুমায়ন আহমদ, মো. ফারুক আহমদ, মো. নজরুল ইসলাম, জুবায়ের রকিব চৌধুরী, আক্তার হোসেন খান, আব্দুল হাদি পাবেল, শহীদ আহমদ চৌধুরী ও মোহাম্মদ আব্দুস সালাম। অ্যাসোসিয়েট ক্যাটাগরিতে প্রার্থী হয়েছেন মাসুদ আহমদ চৌধুরী, মো. এমদাদ হোসেন, পিন্টু চক্রবর্তী, আব্দুর রহমান, চন্দন সাহা, মো. আতিক হোসেন।

আর সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদে প্রার্থী হয়েছেন এহতেশামুল হক চৌধুরী, সাহিদুর রহমান, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, মুশফিক জায়গিরদার, আব্দুর রহমান জামিল, খন্দকার ইসরার আহমদ রকী, শফিকুল ইসলাম, শান্ত দেব, আব্দুস সামাদ, খলিলুর রহমান চৌধুরী, ফখর উছ সালেহীন নাহিয়ান এবং আলীমুল এহছান এহছান চৌধুরী।

এদিকে, সিলেট চেম্বারের নির্বাচন উপলক্ষ্যে বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। চেম্বার হল রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান এডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খান বলেন, ২১ সেপ্টেম্বর নগরীর ধোপাদীঘিরপাড়স্থ ইউনাইটেড কমিউনিটি সেন্টারে সকাল ৯ ঘটিকা থেকে বিকাল ৪ ঘটিকা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলবে এবং ভোট গণনা শেষে ঐদিনই নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

তিনি জানান, এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা সর্বমোট ২,৪৬৫ জন। যার মধ্যে অর্ডিনারী ১৪১৩ জন, এসোসিয়েট ১০৪০ জন, ট্রেড গ্রুপ ১১ জন ও টাউন এসোসিয়েশন ১ জন। এবছর পরিচালনা পরিষদের ২২টি পদে সর্বমোট ৪১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, যার মধ্যে অর্ডিনারী শ্রেণী থেকে ২৪ জন, এসোসিয়েট শ্রেণী থেকে ১০ জন এবং ট্রেড গ্রুপ শ্রেণী থেকে ৬ জন প্রার্থী রয়েছেন।

এসময় সিলেট চেম্বারের প্রশাসক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজনে নির্বাচন বোর্ড ও আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সকলে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে চাই।

প্রসঙ্গত, সিলেট চেম্বার অব কমার্সের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন গত ২৭ এপ্রিল হওয়ার কথা ছিল ২৭ এপ্রিল। ভোটার তালিকায় গলদ, মামলা জটিলতায় প্রায় ৫ মাস পর এ নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত