শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

১৮ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০৭

পরিবেশ ধ্বংস করে শ্রীমঙ্গলে চলছে টিলা কাটা

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে একটি মাধ্যমিক স্কুল সংলগ্ন টিলা কেটে কবরস্থান উঁচু করছে স্থানীয় এলাকাবাসী। টিলা কাটার ফলে পরিবেশ ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি স্কুলের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) উপজেলার শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা বিষামনি এলাকায় সকাল থেকে টিলা কাটা শুরু হয়।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিষামনি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন স্থানীয় লোক কোদাল দিয়ে টিলার মাটি কেটে করবস্থানে নিয়ে ফেলছে, টিলা থেকে কাটা মাটিগুলোকে ঠেলাগাড়িতে করে নিয়ে বিষামনি মসজিদের সাথের কবরস্থানে ফেলা হচ্ছে। টিলা যেখান থেকে কাটা হচ্ছে তার ঠিক উপরেই টিলার উপর বিষামনি উচ্চ বিদ্যালয়। সেখানে স্কুলের কয়েকটি ঘর রয়েছে। টিলা কাটার ফলে সেখানে ধসের আশংকা দেখা দিয়েছে ৷

এদিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে মাটি কাটার শ্রমিকরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

স্থানীয় একাধিক এলাকাবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বর্ষার সময় নাকি কবরস্থানে পানি জমে যায় তাই এলাকার মুরব্বীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই কাজ করা হচ্ছে।”

বিষামনি এলাকার বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, কাটা টিলাটির মালিক শাহজাহান মিয়া নামের স্থানীয় একজনের পরিবারের।

তবে শাহজাহান মিয়া মাটি কাটার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, “কবরস্থান উঁচু করার জন্য মাটি ফোলানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে ঠিক, তবে টিলা কেটে মাটি ফেলার কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। কারা টিলা কাটছে সে ব্যাপারে আমি অবগত নই।”

বিষামনী উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অর্ধেন্দু কুমার দেব বলেন, “আমাদের স্কুলের কোন জায়গার টিলা কাটা হচ্ছে না। আশে পাশে হয়তোবা টিলা কাটা হচ্ছে, সেটা ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় পরেছে। তবে কোন জায়গার পাহাড় বা টিলা কাটা উচিত না। এতে পরিবেশ ভারসাম্য নষ্ট হয়। আমি বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।”

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, “স্কুল কম্পাউন্ডের এত কাছের এই টিলা কাটার ফলে স্কুলের ক্ষতি হতে পারে। যেখানে টিলা কাটা হচ্ছে তার সাথে স্কুলের কয়েকটি ঘর রয়েছে।”

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এই স্কুলে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে পাঁচশোর মতো।

এদিকে পরিবেশবাদীরা বলছেন টিলা কাটার ফলে সেখানকার প্রতিবেশ হুমকির মুখে পড়বে পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষার্থীরাও হুমকির সম্মুখীন হবে।

প্রধান শিক্ষক নূপুর রাণী সেন সিলেটটুডে কে বলেন, “দুর্গাপূজার ছুটির আগেই এই টিলা কাটা শুরু হয় তখন আমি জায়গার মালিক শাহজাহান মিয়া কে স্কুলের ক্ষতির বিষয়ে বলি তিনি আমাকে জানান সেখানে তারা ৫ইঞ্চি গাইড দেয়াল নির্মাণ করে দেবেন।”

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, “পাহাড় বা টিলা কাটা অপরাধ, আমি সেখানে তহশিলদারকে পাঠিয়েছি। কোন ধরনের অনিয়ম পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

আপনার মন্তব্য

আলোচিত