সিলেটটুডে ডেস্ক

১৬ নভেম্বর, ২০১৯ ১৯:৪১

সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবি অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর বৈষম্যমূলক ধারা সংশোধনসহ সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সিলেট জেলা সিএনজি চালিত অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজিঃ নং চট্ট-৭০৭) নেতৃবৃন্দ। এই দাবিতে সোমবার সিলেটে মানববন্ধন কর্মসূচি আহ্বান করেছেন তারা।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে করে এ দাবি জানান তারা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি মো. জাকারিয়া।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ প্রণীত হয়েছে। ইতোপূর্বে ১ নভেম্বর থেকে তা কার্যকর করার কথা থাকলে ও বিধি, প্রবিধান প্রণয়ন না হওয়ায় সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কার্যকরের তারিখ ১ সপ্তাহ করে ২ বার পিছিয়েছেন।’

জাকারিয়া বলেন, সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ এর ৬৬ ধারায় উল্লেখ্য যে, কোন চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে তাকে ২৫০০০/- টাকা জরিমানা ও ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ডের বিধান রহিয়াছে। সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালকরা কি এই জরিমানা দিতে সক্ষম? এছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ৮ম শ্রেণি পাশ হতে হবে, এই বিধান যুক্ত করা হয়েছে। সাধারণ শ্রমিকদের মনে প্রশ্ন জেগেছে জাতীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, সিটি বা পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা মেম্বার কারো বেলায়ই শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন অনুভব করা হয়নি। অথচ সিএনজি চালিত অটোরিক্সার চালক হতে হলে বা ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে ৮ম শ্রেণি পাশ লাগবে। এটাও শ্রমিকরা চরম একটি বৈষম্য হিসাবে দেখছেন।’

একই সাথে আইনের ৭২ ধারায় লেখা আছে রেজিস্ট্রেশন ব্যতীত মোটরযান চালনা সংক্রান্ত, যদি কোন ব্যক্তি ধারা-১৬ এর বিধান লঙ্ঘন করেন তাহলে উক্ত লঙ্ঘন জনিত অপরাধের জন্য অনধিক ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ৫০,০০০/- টাকা জরিমানার বিধান রহিয়াছে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, আজ দীর্ঘ ৫ বৎসরের বেশী সময় যাবৎ সিলেটে সি.এন.জি চালিত অটোরিক্সার রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হচ্ছে না। রেজিস্ট্রেশনের জন্য সরকারি নির্দিষ্ট ফি: জমা দেওয়া থাকলেও চালকরা বা মালিকরা রেজিস্ট্রেশন পাচ্ছেন না। এই বিষয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের পক্ষ থেকে দাবি জানিয়ে আসছি যে, সিলেটে যেন এই গাড়িগুলির বিক্রয় বন্ধ করা হয় এবং জমাকৃত ফি: প্রদানকারীদের গাড়িগুলিকে রেজিস্ট্রেশন প্রদান করা হয়। কিন্তু সিলেটের প্রশাসন তাহা আমলে আনছেন না।’

তিনি আরও বলেন, আইনের ধারা-৭৫, ধারা-২৫, ধারা-৭৬ এও আইনের মধ্যে বৈষম্য লক্ষ করা যাচ্ছে। যার কারণে উক্ত আইন দ্বারা সি.এন.জি চালিত অটোরিক্সা চালকরা যাত্রী সেবার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করার একমাত্র পথ সেটা বন্ধ হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। এজন্য তারা এ আইনের বৈষম্যমূলক জায়গাগুলিকে (ধারাগুলি)কে সংশোধন করার জোর দাবি জানান তারা।

জাকারিয়া আরও বলেন, (৭২) (৭৩) (৭৫) (৭৭) (৭৯) (৮৪) (৮৬) (৮৯) (৯২) (৯৮) বা (১০৫) এর অধীন যে কোন ধারা লঙ্ঘনের অপরাধে পুলিশ কর্মকর্তা চালককে যে কোন সময় গ্রেফতার করতে পারেন। এই সমস্ত বিষয়ে উক্ত আইনকে অপপ্রয়োগের মাধ্যমে সাধারণ চালকরা পুলিশি হয়রানির শিকার হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এজন্য তারা আতঙ্কিত।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা সি.এন.জি চালিত অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্ট-৭০৭ এর জেলা কার্যকরী কমিটির সহ-সভাপতি আবুল হোসেন খাঁন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল আহমদ, কল্যাণ সম্পাদক আব্দুল মন্নান, অর্থ সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুন, সদস্য রফিকুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, এম. বরকত আলী, রাজা আহমদ রাজা, নুরুল হক, লিটন আহমদ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সুজন মিয়া, এপল আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা উপ-পরিষদের সহ-সভাপতি আব্দুল হামিদ, সম্পাদক শিবলী আহমদ, হুমায়ূন রশিদ চত্ত্বর উপ-পরিষদের সম্পাদক মিলন আহমদ, টিলাগড় উপ পরিষদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলেক খান প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত